সংবাদ প্রতিবেদন (জুয়েল রানা):
বাংলাদেশের সবচেয়ে উত্তরের জেলা পঞ্চগড়, যেখানে ১১ লাখ ৭৯ হাজারেরও বেশি মানুষ বসবাস করেন। শান্তি ও শৃঙ্খলার দিক থেকে জেলা হিসেবে পরিচিত হলেও বাস্তবে এই জনপদের চিকিৎসা, শিক্ষা ও কর্মসংস্থান—সবদিক থেকেই রয়ে গেছে চরম অবহেলিত।
সবচেয়ে বিষয়বস্তুত সংকট দেখা দিয়েছে স্বাস্থ্যখাতে। জেলা সদর হাসপাতাল বা উপজেলা পর্যায়ে জটিল বা গুরুতর রোগের চিকিৎসা ব্যবস্থা প্রায় নেই বললেই চলে। দুর্ঘটনায় আহত কিংবা গুরুতর অসুস্থ রোগীদের রংপুর বা দিনাজপুরে পাঠাতে হয়, যা প্রায় ১৩৫ থেকে ১৪৫ কিলোমিটার দূরের পথ। এই দীর্ঘ ও কষ্টকর যাত্রাপথে প্রতিনিয়ত মৃত্যুবরণ করছেন অনেক রোগী, যা অত্যন্ত মর্মান্তিক।
পঞ্চগড় জেলা হাসপাতালে অভিজ্ঞ চিকিৎসকের অভাব চরমে। বদলি হয়ে যাওয়া ডাক্তাররা আর ফিরে আসেন না, আর যাঁরা থাকেন, তাঁদের মধ্যে অনেকেই ফার্মাসিস্ট বা কম দক্ষ। চিকিৎসার জায়গা দখল করে ফেলেছে দালালচক্র। একই সঙ্গে রোগীদের জন্য বরাদ্দকৃত খাদ্যের মানও অত্যন্ত নিকৃষ্ট, যা দুর্নীতি ও দায়িত্বহীনতার নগ্ন চিত্র তুলে ধরে।
এ অবস্থায় স্থানীয় জনগণ বলছে, সাবেক কর্তৃত্ববাদী আমলে কোনো রাজনৈতিক প্রতিনিধি এই সংকট সমাধানে ভূমিকা রাখেননি। পঞ্চগড়বাসী মনে করে, দীর্ঘদিনের অবহেলার এই ইতিহাস এখন পাল্টানোর সময় এসেছে।
হাসপাতালের দাবিতে আন্দোলন
সম্প্রতি সরকার চীনের সহায়তায় তিনটি আধুনিক হাসপাতাল নির্মাণের পরিকল্পনা করছে, যার একটি নীলফামারীতে করার প্রস্তাব রয়েছে। কিন্তু পঞ্চগড়বাসী এ নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে বলছে, "রংপুরে মেডিকেল কলেজ, সদর হাসপাতাল—সবই রয়েছে। দিনাজপুরেও মেডিকেল কলেজ ও আধুনিক চিকিৎসাসেবা আছে। তাহলে পঞ্চগড়ের মানুষের জন্য কেন থাকবে না এমন একটি হাসপাতাল?"
তাদের প্রশ্ন—একটি জেলার লাখো মানুষের জীবন বাজির ওপর ঝুলে থাকবে কেন?
এখন পঞ্চগড়বাসী সরব, সোচ্চার—তাদের যৌক্তিক দাবি, আধুনিক হাসপাতালটি হোক পঞ্চগড়েই।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!