জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে লোক প্রশাসন বিভাগে ( অনার্স ) দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যায়নরত মেধাবী শিক্ষার্থী প্রিয়া রানী দাস। ইতিমধ্যে জবিতে পড়ালেখায় কেটেছে তার দুইটি বছর। সে শিঘ্রই তৃতীয় বর্ষে পদার্পণ করবে।
ময়মনসিংহ জেলাধীন গৌরীপুর পৌর শহরের কালীপুর মধ্যম তরফ এলাকার একটি জরাজীর্ণ ভাড়া বাসায় তাদের পরিবারের ৪ জনের বসবাস।
প্রিয়ার বাবা দিলীপ দাস আগে গৃহ শিক্ষকতা করতেন কিন্তু পুরাতন সিলেবাস পরিবর্তন হওয়ায় তিনি সেই পেশা ছেড়ে দিয়ে সংসারের হাল ধরে রাখার জন্য কাজ করেন দলিল লেখকদের সহায়ক হিসেবে। একটি স্থানীয় পত্রিকাতেও লেখালেখি করেন তিনি। এসকল কাজের বিনিময়ে
যা আয় করেন, তা দিয়ে সংসার ঠিক মতো চলে না তাঁর। মেয়ের পড়ালেখায় বেশ অর্থ খরচ হয়েছে বিগত দুইটি বছরে । রয়েছে আরও সন্তান, তাদের পড়ালেখা নিয়েও দুঃচিন্তা করেন দিলীপ দাস। বর্তমানে সংসারের অবস্থা সংকটাপন্ন হলেও মেয়ের উচ্চ শিক্ষার ব্যাপারে তিনি দীর্ঘ আশাবাদী।
মঙ্গলবার ( ৬ ডিসেম্বর ) এ ব্যাপারে দিলীপ কুমার দাসের সঙ্গে কথা হয় বাংলা ৫২নিউজ ডটকমের। তিনি বলেন, মেয়েকে ভর্তির জন্য টাকা ম্যানেজ করতে সমাজের বিত্তবান ও হৃদয়বান ব্যক্তিদের সহায়তা নিতে হয়েছিল তাঁর। গত ২৯ ডিসেম্বর ২০২২ সনে মেয়ের ভর্তির শেষ তারিখ ছিল কিন্তু সেইদিন কোনভাবেই যখন তিনি টাকা যোগার করতে পারছিলেন না, তখনই সাংবাদিকদের কাছে এ ভর্তির কথা প্রকাশ করেন তিনি এবং ২৮ ডিসেম্বর ২০২২ বহু জাতীয় সংবাদপত্রে প্রিয়ার দৈন্যতার বিষয়ে লেখালেখি হয়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। এ সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর পরই অনেকেই তার প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়ালে প্রিয়া জবিতে ভর্তি হতে সক্ষম হন। ভর্তিকালীন সময়ে মেধা তালিকায় ৫৩ তম স্থানে ছিলেন প্রিয়া।
প্রিয়া বলেন, আমার পড়ালেখা শুরু থেকেই বাবা কষ্ট করে সংসার চালান আর আমি সেই কষ্টের মাঝেই পড়ালেখা করেছি। আমি বিসিএস ক্যাডার হওয়ার স্বপ্ন নিয়েই পড়ালেখা করছি । এনজিও (NGO) সমিতি থেকে উত্তোলনকৃত ঝণ ও নিকট আত্মীয় স্বজনের কাছে থেকে ধারকর্জ করে বাবা আমার বড় বোনের বিবাহের ব্যবস্থা করেছেন । সেই ঝণ ও ধারকর্জের টাকা পরিশোধ ও আমার পড়ালেখার খরচের টাকা তার পক্ষে যোগার করা কোন মতেই সম্ভব হচ্ছে না তাই নিরুপায় হয়ে আমি আবারও অধ্যায়নরত অবস্থায় সাংবাদিকবৃন্দসহ সুশীল সমাজের স্মরণাপন্ন হলাম। মেয়ে হিসেবে আমি আমার পিতামাতার জন্য গর্ববোধ করি এবং সেই সাথে দেশ ও প্রবাস থেকে বিগত সময়ে যারা আমার জন্য মানবতার হাত প্রসস্থ করেছিলেন এবং আজও সেই আশাবাদ নিয়েই গণমাধ্যমে আশ্রিত হয়েছি।
লগইন
জবিতে অধ্যায়নরত প্রিয়ার পড়ালেখা সংকটাপন্ন অবস্থায় । ছবি প্রতিনিধি
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!