logo

যোগাযোগের ঠিকানাঃ

House-1, Road-2, Metro Housing Ltd, (Beside RAB-2 Headquarter), Mohammadpur, Dhaka-1207

নিউজ রুম

+8801711701332, +8801766004470

মার্কেটিং এন্ড সেলস

+8801877756675

logo

BDCN24 হল সংবাদ, মতামত এবং বিনোদনের জন্য একটি বাংলাদেশ ভিত্তিক মাল্টিমিডিয়া প্ল্যাটফর্ম। এটি পাঠক এবং শ্রোতাদের রাখার জন্য একটি ২৪/৭/৩৬৫ এর প্ল্যাটফর্ম

যোগাযোগের ঠিকানাঃ

House-1, Road-2, Metro Housing Ltd, (Beside RAB-2 Headquarter), Mohammadpur, Dhaka-1207

নিউজ রুম

+8801711701332, +8801766004470

মার্কেটিং এন্ড সেলস

+8801877756675

হোম - সারা দেশ- রংপুরে আলুচাষিদের দুর্দশা: হিমাগার সংকটে লোকসানের মুখে কৃষকরা

রংপুরে আলুচাষিদের দুর্দশা: হিমাগার সংকটে লোকসানের মুখে কৃষকরা

রংপুরে আলুচাষিদের দুর্দশা: হিমাগার সংকটে লোকসানের মুখে কৃষকরা । ছবি সংগৃহীত

রংপুরের হাজারো আলুচাষি এখন চরম দুশ্চিন্তায়। মাঠ থেকে উত্তোলন করা আলুর ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না তাঁরা, আবার সংরক্ষণের জন্য পর্যাপ্ত হিমাগারের ব্যবস্থাও নেই। ফলে লোকসানের শঙ্কায় দিন কাটছে কৃষকদের।


হিমাগারে জায়গা নেই, কৃষকদের দুর্ভোগ চরমে


তালুক উপাসু গ্রামের কৃষক কাজল মিয়া এবার প্রায় এক একর জমিতে আলু চাষ করেছেন। জমির ইজারা ও বীজ আলুর উচ্চমূল্যের কারণে প্রতি কেজি আলু উৎপাদনে তাঁর খরচ হয়েছে প্রায় ২০ টাকা। কিন্তু বর্তমানে বাজারে আলুর দাম ১৩ থেকে ১৪ টাকা হওয়ায় প্রতি কেজিতে তাঁকে লোকসান গুনতে হচ্ছে। হিমাগারে রাখার জায়গাও মিলছে না, ফলে দিশেহারা অবস্থায় আছেন তিনি।


শুধু কাজল মিয়াই নন, জেলার আরও বহু কৃষক একই সমস্যার মুখোমুখি। রংপুর কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এবার জেলায় প্রায় ১৮ লাখ ৭৫ হাজার ৭২৪ মেট্রিক টন আলু উৎপাদিত হয়েছে। কিন্তু হিমাগারে সংরক্ষণের সুযোগ রয়েছে মাত্র ৪ লাখ ১৬ হাজার ৩০০ মেট্রিক টনের। অর্থাৎ, মোট উৎপাদিত আলুর প্রায় ৭৮ শতাংশ সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেই।


হিমাগার সংকট ও দীর্ঘ প্রতীক্ষা


রংপুরে বর্তমানে ৪০টি হিমাগার রয়েছে, যার মধ্যে মাত্র একটি সরকারি। এই হিমাগারগুলোতে আলু সংরক্ষণের জায়গা দ্রুত ফুরিয়ে যায়। ফলে কৃষকদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। নগরের বিনোদপুর এলাকার এক হিমাগারের সামনে ১২ মার্চ বহু কৃষককে সারাদিন অপেক্ষা করতে দেখা যায়, তবে সবাই আলু সংরক্ষণের সুযোগ পাননি।

আরও পড়ুন

রংপুর: খরার মুখোমুখি মানুষ, হুমকির মুখে ফসল

ছবি ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত

চওড়াহাট এলাকার চাষি সাইফুল ইসলাম ১৬ একর জমিতে আলু চাষ করেছেন। উৎপাদিত আলুর ১ হাজার বস্তা হিমাগারে রাখতে চাইলেও মাত্র ৬০০ বস্তা রাখতে পেরেছেন। বাকি আলু নিয়ে কী করবেন, তা ভেবে চিন্তায় আছেন তিনি।


নিম্নদামে বিক্রির বাধ্যবাধকতা


হিমাগারে জায়গা না পেয়ে কৃষকরা বাধ্য হয়ে কম দামে আলু বিক্রি করছেন, ফলে তাঁরা বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। আলুচাষি সংগ্রাম কমিটির জেলার আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন বলেন, "যখন আলু বেশি উৎপাদিত হয়, তখন কৃষক ক্ষতির মুখে পড়েন। আবার কম উৎপাদিত হলে ভোক্তাদের বাড়তি দামে কিনতে হয়। অথচ আলুর বাজারনিয়ন্ত্রণে সরকারের কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই।"


রপ্তানি কম, শিল্পায়নের দাবি কৃষকদের


অতিরিক্ত আলু রপ্তানি করা গেলে কৃষকদের লোকসান অনেকটাই কমে আসত। তবে রংপুর থেকে আলু রপ্তানির হার অত্যন্ত কম। ২০২১-২২ অর্থবছরে রংপুর থেকে ১৯ হাজার ৩৭১ মেট্রিক টন আলু রপ্তানি হলেও গত বছর তা নেমে আসে মাত্র ৩৭৪ মেট্রিক টনে। এবার মার্চ-এপ্রিল পর্যন্ত মাত্র ৩৮৭ মেট্রিক টন আলু রপ্তানি হয়েছে মালয়েশিয়া, শ্রীলঙ্কা ও নেপালে।


জেলা আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ বণিক বলেন, "সরকার যদি রংপুর অঞ্চলে আলুকেন্দ্রিক শিল্পায়ন এবং রপ্তানির উদ্যোগ নেয়, তাহলে কৃষকেরা বড় ধরনের ক্ষতির হাত থেকে বাঁচতে পারবেন।" তিনি আরও জানান, সরকারিভাবে প্রতিটি উপজেলায় হিমাগার নির্মাণ করা হলে কৃষকদের জন্য এটি আশীর্বাদস্বরূপ হবে।


কৃষকদের দাবি, সরকারের হস্তক্ষেপ জরুরি


রংপুরের কৃষক সংগঠনগুলোর নেতারা বলছেন, প্রতি বছর একই সংকট দেখা দিলেও এর সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। সরকারিভাবে আলু সংরক্ষণের হিমাগারের সংখ্যা বাড়ানো, আলু প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প গড়ে তোলা এবং রপ্তানির সুযোগ বৃদ্ধি করা হলে কৃষকেরা আর্থিকভাবে লাভবান হবেন। অন্যথায়, আগামী বছরগুলোতেও কৃষকেরা একই সমস্যায় পড়বেন এবং আলু চাষ থেকে ধীরে ধীরে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারেন।


রংপুরের হাজারো আলুচাষির ভবিষ্যৎ এখন সরকারের যথাযথ পদক্ষেপের ওপর নির্ভর করছে। তারা আশাবাদী, সরকার দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নিলে এই সংকটের সমাধান সম্ভব হবে।

মন্তব্য করুন ( 0 )

মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!

আরও খবর দেখুন

রংপুরে আলুচাষিদের দুর্দশা: হিমাগার সংকটে লোকসানের মুখে কৃষকরা

বিডিসিএন ২৪, নিজস্ব প্রতিনিধি

image

রংপুরের হাজারো আলুচাষি এখন চরম দুশ্চিন্তায়। মাঠ থেকে উত্তোলন করা আলুর ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না তাঁরা, আবার সংরক্ষণের জন্য পর্যাপ্ত হিমাগারের ব্যবস্থাও নেই। ফলে লোকসানের শঙ্কায় দিন কাটছে কৃষকদের।


হিমাগারে জায়গা নেই, কৃষকদের দুর্ভোগ চরমে


তালুক উপাসু গ্রামের কৃষক কাজল মিয়া এবার প্রায় এক একর জমিতে আলু চাষ করেছেন। জমির ইজারা

ও বীজ আলুর উচ্চমূল্যের কারণে প্রতি কেজি আলু উৎপাদনে তাঁর খরচ হয়েছে প্রায় ২০ টাকা। কিন্তু বর্তমানে বাজারে আলুর দাম ১৩ থেকে ১৪ টাকা হওয়ায় প্রতি কেজিতে তাঁকে লোকসান গুনতে হচ্ছে। হিমাগারে রাখার জায়গাও মিলছে না, ফলে দিশেহারা অবস্থায় আছেন তিনি।


শুধু কাজল মিয়াই নন, জেলার আরও বহু কৃষক একই সমস্যার মুখোমুখি। রংপুর কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এবার জেলায় প্রায় ১৮ লাখ ৭৫ হাজার ৭২৪ মেট্রিক টন আলু উৎপাদিত হয়েছে। কিন্তু হিমাগারে সংরক্ষণের সুযোগ রয়েছে মাত্র ৪ লাখ ১৬ হাজার ৩০০ মেট্রিক টনের। অর্থাৎ, মোট উৎপাদিত আলুর প্রায় ৭৮ শতাংশ সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেই।


হিমাগার সংকট ও দীর্ঘ প্রতীক্ষা


রংপুরে বর্তমানে ৪০টি