বাংলাদেশের সিনেমা ও সংগীত ইন্ডাস্ট্রিতে বড় পরিবর্তন আসছে বলে মন্তব্য করেছেন সংগীতশিল্পী ও অভিনেতা প্রীতম হাসান। তিনি জানিয়েছেন, এখন ১০-১৫ কোটি টাকার বাজেটের সিনেমা তৈরি হচ্ছে, যা কয়েক বছর আগেও কল্পনা করা কঠিন ছিল। "বড় বাজেটের সিনেমা মানে ভালো মানের মিউজিকেরও বাজেট বাড়বে," বলেন প্রীতম। এর ফলে সংগীত শিল্পী ও সংশ্লিষ্টরা আরও ভালো পারিশ্রমিক পাবেন এবং পুরো ইন্ডাস্ট্রিই এর সুফল ভোগ করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
প্রথম আলোকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে প্রীতম বলেন, দক্ষিণ ভারতের মিউজিক ইন্ডাস্ট্রি যেভাবে সংগীত পরিচালকদের গুরুত্ব দেয়, আমাদেরও নিজেদের বাদ্যযন্ত্রীদের প্রতি সেই সম্মান ফিরিয়ে আনতে হবে।
"একটা সিনেমা দেশের ইন্ডাস্ট্রিকে বদলে দিতে পারে, আবার একটা গানও সিনেমাকে সুপারহিট করে তুলতে পারে," — এমন মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি আরও যোগ করেন, আগে যেমন সেশন মিউজিশিয়ানদের সঙ্গে আলাদা আলাদা করে কাজ হতো, এখন আবার সেই ব্যবস্থাকে ফিরিয়ে আনতে হবে, যাতে মানসম্মত গান তৈরি হয়।
নিজের সংগীত ক্যারিয়ার নিয়ে বলতে গিয়ে প্রীতম বলেন, বাবার (প্রয়াত সংগীতশিল্পী খালিদ হাসান মিলু) ভক্তদের কাছ থেকে প্রশংসা পাওয়া তাঁর জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি। "অনেক পরিশ্রমের ফল আমরা পাচ্ছি। বাংলা সিনেমাকে আরও এগিয়ে নিতে আমি নিজের সর্বোচ্চ দিতে চাই," বলেন তিনি।
'লাগে উরাধুরা' গানের আন্তর্জাতিক সাফল্য প্রসঙ্গে প্রীতম বলেন, "ছোট একটি দেশ থেকেও আমরা বিশ্বমানচিত্রে জায়গা করে নিচ্ছি। যদি সবাই মিলে মন দিয়ে কাজ করি, তাহলে আরও বড় কিছু সম্ভব। আগামী তিন-চার বছর বাংলাদেশের মিউজিক ইন্ডাস্ট্রির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হবে।"
বিশ্বমঞ্চে টিকে থাকতে হলে শিল্পী, প্রযোজকসহ সবাইকে লাভবান করে এমন একটি সিস্টেম গড়ে তোলার আহ্বান জানান প্রীতম। রয়্যালটি ও স্বত্ব সংরক্ষণ নিয়েও তাঁর সুনির্দিষ্ট ভাবনা রয়েছে।
নিজের প্রভাব সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে প্রীতম বলেন, তিনি সব সময় হাবিব ওয়াহিদ, ফুয়াদ আল মুক্তাদির, অর্ণবের মতো গুণী সংগীতশিল্পীদের সম্মান করেন এবং তাঁদের কাছ থেকে অনুপ্রাণিত হন। "হাবিব ভাইয়ের মতো মানুষদের সম্মান না করে থাকা সম্ভব নয়," বলেন প্রীতম।
গানের পাশাপাশি অভিনয়ে সফলতা প্রসঙ্গে প্রীতম জানান, নুহাশ হুমায়ূন, তানিম রহমান অংশু এবং শিহাব শাহীনসহ অনেক নির্মাতার সাহচর্যে তিনি এগিয়ে যেতে পেরেছেন। বিশেষ করে শর্টফিল্ম 'আড়াল'-এর জন্য মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারে সমালোচক বিভাগের পুরস্কার পাওয়া তাঁকে আরও অনুপ্রাণিত করেছে।
"গুরুজনদের আশীর্বাদ ছাড়া এগিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়," বলেন প্রীতম হাসান, গভীর কৃতজ্ঞতায়।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!