নিজস্ব প্রতিনিধি:-
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের কড়ৈতলী গ্রামে দীর্ঘদিন থেকে মুক্তিযােদ্ধাদের পরিচালনায় ঐতিহ্যবাহী বাবুর দিঘী থেকে মাছ ধরতে গেলাে রাজনীতি পরিচয়ে একদল মাছ খেকাে। মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে সন্ত্রাসীদের প্রতিহত করতে গেলে মুক্তিযুদ্ধা,বাজারের ব্যবসায়ী ও স্থানীয় সাধারন এলাকাবাসীকে আক্রমন করে রাতের আঁধারের মৎস লুন্ঠকারী বাহীনি। তাদের আক্রমনে অন্তত:২০/২৫ জন আহত হয়েছে। স্থানীয় প্রবীন মুক্তিযুদ্ধা দেলােয়ার হােসেন কাছ থেকে মুঠােফােনে
সংঘাতের সংবাদ শুনে ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
৩১ আগস্ট বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা ডিপুটি কমান্ডার সোরয়োর হোসেনে প্রতিবেদকে জানান,দীর্ঘদিন থেকে ঐতিহ্যবাহী বাবুর দিঘীতে মাছ চাষ করে আসছে ফরিদগঞ্জ মুক্তিযুদ্ধা সংসদের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। কিন্তু স্থানীয় যুবলীগ নেতা মুশফিকুর রহমান ইমু দাবী করেন তিনি ফরিদগঞ্জ মুক্তিযুদ্ধা সংসদের কাছ থেকে মৌখিক ভাবে এক বছরের জন্য লিজ নিয়েছেন দীঘিটি। এদিকে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার শহিদুল্লাহ তফদার ও ডেপুটি কমান্ডার সারোয়ার হোসেন আমাদেরকে প্রতিবেদককে বলেন,মুশফিকুর রহিম ইমু নামে কােন যুবলীগ নেতাকে মৌখিক এবং লিখিতভাবে লিজ দেওয়া হয়নি। দীর্ঘদিন থেকে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নেতৃবৃন্দরা এ দীঘি পরিচালনা করে আসছে। রাতের আঁধারে ইমুর সন্ত্রাসী বাহিনীরা দিঘির মাছ ধরতে আসলে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়া স্থানীয় ব্যবসায়ীদের দোকান ঘর ভাংচুর আমেরিকা প্রবাসীদের বাড়িতে আক্রমণ ও লুটপাট করা হয় বলে আমেরিকান প্রবাসীর ভাই ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন জানান। এছাড়া
স্থানীয় উৎসব জনতা জানান,দেশীয় অস্ত্র দা,চেনী , লাঠিসোটা ও ককটেল ফাটিয়ে মৎস্য লুণ্ঠনকারী বাহীনির সন্ত্রাসীরা আতংঙ্ক সৃষ্টি করে।
এ বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার সারোয়ার হোসেন,মুক্তিযোদ্ধা সফর আলী,নান্নু হোসেন,দেলোয়ার হোসেন পাটওয়ারীরা জানান, আমরা গত ১৫/২০ বছর যাবৎ সরকারের কাছ থেকে দিঘী লীজ নিয়ে মাছ চাষ করে আসছি। দিঘীতে ৯ একরের মধ্যে ৭ একর ২৫ শতক সরকারী সম্পত্তি রয়েছে। গত ৩ বছর ৫৮ হাজার টাকা করে লীজের টাকা পরিশোধ করে আসছি। আপনারা সাব লীজ দিয়েছিলেন কি? প্রশ্নের জবাবে অস্বীকার করে জানান, সাব-লীজ দেওয়ার কোন বৈধতা নেই তাই সাব লীজ দেওয়া হয়নি। তবে প্রতিপক্ষ যুবলীগ নেতা মুশফিকুর রহমান ইমু বলেন,মুক্তিযােদ্ধারা আমাকে মৌখিকভাবে সাব লীজ দিয়েছেন। কমপক্ষে ১০ লাখ টাকা দিঘীর ইজাড়া মূল্য থাকলেও সিন্ডিকেট করে সরকারের বড় অংকের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে চলছে বর্তমানে দখলদার মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নেতৃবৃন্দ।
এ বিষয়ে স্থানীয় যুবলীগ নেতা মুশফিকুর রহমান ইমু আরাে জানান,আমি উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোঃ শহিদুল্যাহ তপাদাদের কাছ থেকে এক বছরের জন্য ৪লক্ষ ৫০ হাজার টাকায় মূখিক লীজ নিয়েছি। এর মধ্যে ৩লক্ষ টাকাও দিয়েছি। আমি গত প্রায় তিদ বছর সাব লীজ নিয়ে এ দিঘীতে মাছ চাষ করে আসছি। মুক্তিযুদ্ধারা উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে বাড়াটিয়া সন্ত্রাসী এনে আমাদের চাষকৃত দিঘীতে রাত ৯ টারদিকে জাল দিয়ে মাছ লুট করতে আসে। খবর শুনে বাঁধা দিতে গেলে, তারা আমাদের উপর উল্টাে অর্ততিক দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে আমাদের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীকে আহত করেছে।
এ বিষয়ে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার মোঃ শহিদুল্যাহ তফদার জানান,আমি গতকাল রাতে ঘটনাস্থলে ছিলামনা। আজ শুক্রবার এ বিষয়টি নিয়ে থানায় বসেছিলাম। মালিক পক্ষের একজন অনুপস্থিত থাকায় সুরাহা করা সম্ভব হয়নি। তাই আগামী বুধবার আবার সুরাহার জন্য বসা হতে পারে। তিনি আরো জানান,দিঘীটি আমরা ২ বছরের জন্য মুক্তিযোদ্ধা দেলোয়ার পাটওয়ারীর ছেলে সাবেক মেম্বার উজ্জল পাটওয়ারীর কাছে মূখিক লীজ দিয়েছিলাম।
থানা পুলিশের এস আই সুমন মিয়া,এএসআই মোঃ মহিউদ্দিন জানান,সংঘর্ষের সংবাদ শুনে ঘটনাস্থলে এসে উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে সক্ষম হয়েছি।
এ বিষয়ে থানা ভারপ্রাপ্ত (তদন্ত) ওসি প্রদীপ মন্ডল জানান, সংঘাতের সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে থমথমে বিরাজমান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এ ঘটনায় ফরিদগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার সারোয়ার হোসেন বাদী হয়ে একটি লিখিত অভিযোগ করেন বলে প্রতিবেদককে জানান। তবে পুলিশিং তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
বার্তা প্রেরক
নিজস্ব প্রতিনিধি
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!