হবিগঞ্জের জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম মাওলা, যিনি আড়াই বছরেরও বেশি সময় ধরে এই পদে রয়েছেন, নানা বিতর্কের কেন্দ্রে। তার বিরুদ্ধে অফিসের রেস্টরুমকে বাসভবনের মতো ব্যবহার করার অভিযোগ রয়েছে, যেখানে তিনি সরকারি তহবিল থেকে মাসে ২৪,৪৪৭ টাকা ভাড়া পাচ্ছেন। ৩০ মাসে ৭ লাখ ৩৩ হাজার ৪১০ টাকা ভাড়া পেলেও তিনি অফিসের রেস্টরুমে অবস্থান করছেন এবং দাবি করেছেন যে, তিনি রোজ ১০০ টাকা সরকারি চালানে জমা দিচ্ছেন, তবে তার সপক্ষে কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি।
গোলাম মাওলার বিরুদ্ধে শুধু এ এক অনিয়ম নয়, বরং বদলি ও পদায়নের নামে শিক্ষকদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। অভিযোগ উঠেছে যে, তিনি সিন্ডিকেট গড়ে তুলে শিক্ষকদের দুর্ভোগের কারণ হয়েছেন। তার অফিসের প্রধান সহকারী নজরুল ইসলামও এই দুর্নীতিতে পিছিয়ে নেই। গোলাম মাওলা ২০২২ সালের ১১ এপ্রিল হবিগঞ্জে যোগ দেন এবং যোগদানের পর থেকেই শিক্ষকদের বদলি, সংযুক্তি ও প্রতিস্থাপনকে বাণিজ্যে পরিণত করেছেন।
অভিযোগকারীরা জানান, তিনি বদলির জন্য ৫০ হাজার থেকে ২ লাখ টাকা ঘুষ নেন, যার ফলে শিক্ষকদের জীবনে চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। ২০২২ সালের ৮ ডিসেম্বর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সারা দেশে শিক্ষকদের ডেপুটেশন আদেশ বাতিল করার পরও গোলাম মাওলা নিজে একটি অফিস আদেশ জারি করে শিক্ষিকাকে কাজে সহায়তার নামে তার দপ্তরে নিয়ে আসেন। এ নিয়ে গুঞ্জন তৈরি হলে ওই শিক্ষিকাকে ফের বদলি করা হয়।
অভিযোগ রয়েছে যে, টাকার বিনিময়ে শিক্ষকদের পছন্দের স্কুলে পদায়ন করাসহ শিক্ষকদের হয়রানি করে গোলাম মাওলা দীর্ঘদিন ধরে দুর্নীতি করে আসছেন। শিক্ষকরা জানান, গোলাম মাওলা কোনো কারণে তাদের অভিযোগের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেননি এবং বরং তাদেরকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করেছেন। তার বিরুদ্ধে উঠা এসব অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
গোলাম মাওলার বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায় তিনি এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং বলেছেন যে, শিক্ষকদের বদলি এখন অনলাইনে হচ্ছে, যা তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে। তিনি দাবি করেন, তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো মিথ্যা।
এদিকে, স্থানীয় শিক্ষক সমাজ এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠেছে এবং তারা চাইছেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেন দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করে।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!