ঢাকাবাসীর জন্য সুখবর! দূষণমুক্ত পরিবহন ব্যবস্থার দিকে এক বড় পদক্ষেপ হিসেবে রাজধানী ঢাকায় চালু হচ্ছে ৪০০টি আধুনিক বৈদ্যুতিক বাস।
বায়ু মান উন্নয়ন ও জ্বালানি নিরাপত্তা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে দুটি বড় প্রকল্পে ৬৪০ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ৭,৮২২ কোটি টাকা) অর্থ সহায়তা অনুমোদন করেছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিস এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
এই অর্থায়নের আওতায় একটি বৃহৎ প্রকল্পে পরিবহন খাতে দূষণ কমাতে পুরোনো ডিজেলচালিত বাসের পরিবর্তে চালু হবে ৪০০টি শূন্য নির্গমন বৈদ্যুতিক বাস। পাশাপাশি স্থাপন করা হবে চার্জিং, পার্কিং ও রক্ষণাবেক্ষণ ডিপো এবং আধুনিক যানবাহন পরিদর্শন কেন্দ্র।
নতুন পরিবহন মডেল ও অবকাঠামো
এই বৈদ্যুতিক বাসগুলো পরিচালিত হবে ‘এক ফ্র্যাঞ্চাইজিতে এক অপারেটর’ মডেলে। অর্থাৎ নির্দিষ্ট রুটে নির্দিষ্ট অপারেটরের মাধ্যমে আধুনিক পরিবহন সেবা নিশ্চিত করা হবে। প্রকল্পে ৫টি নতুন যানবাহন পরিদর্শন কেন্দ্র নির্মাণ, ২টি পুরাতন কেন্দ্রের উন্নয়ন, ২০টি মোবাইল নির্গমন পরীক্ষণ ইউনিট চালু করা হবে।
বিশ্বব্যাংকের পরিবেশ বিশেষজ্ঞ আনা লুইসা গোমস লিমা জানান, "এই প্রকল্পটি দেশের বায়ু মান উন্নয়নের প্রথম ধাপ। আঞ্চলিকভাবে বায়ু দূষণ মোকাবেলায় তথ্য বিনিময় ও সংলাপকে উৎসাহিত করবে।"
বায়ু দূষণ রোধে ‘ক্লিন এয়ার’ প্রকল্প
বিশ্বব্যাংকের অনুমোদিত দ্বিতীয় প্রকল্প ‘বাংলাদেশ ক্লিন এয়ার প্রকল্প’, যার জন্য বরাদ্দ ২৯০ মিলিয়ন ডলার। এতে রিয়েল টাইম এমিশন মনিটরিং, স্বয়ংক্রিয় বায়ু মান পর্যবেক্ষণ স্টেশন স্থাপনসহ বড় আকারের শিল্প ও যানবাহনের নির্গমন নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হবে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদণ্ডের চেয়ে ঢাকার বায়ুতে ১৮ গুণ বেশি ক্ষতিকর পার্টিকুলেট ম্যাটার (PM2.5) থাকায় এই প্রকল্প ঢাকার জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।
গ্যাস নিরাপত্তায় পেট্রোবাংলার জন্য ৩৫০ মিলিয়ন ডলার
জ্বালানি খাতে ৩৫০ মিলিয়ন ডলারের আরেক প্রকল্পের মাধ্যমে পেট্রোবাংলাকে সাশ্রয়ী অর্থায়নের সুযোগ সৃষ্টি করে নির্ভরযোগ্য গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে। এর আওতায় আইডিএ গ্যারান্টির মাধ্যমে ২.১ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত বেসরকারি বিনিয়োগ সংগ্রহ করে এলএনজি আমদানির সক্ষমতা বাড়ানো হবে।
বিশ্বব্যাংকের অন্তর্বর্তী কান্ট্রি ডিরেক্টর গেইল মার্টিন বলেন, “জ্বালানি নিরাপত্তা ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়নের চাবিকাঠি।”
বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ওলাঙ্কা বিসিরিয়ু ইডেবিরি বলেন, “এই প্রকল্প শিল্প ও গার্হস্থ্য খাতে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করবে, যার ফলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান বাড়বে।”
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!