এই নিবন্ধটি বাংলাদেশে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের তাৎপর্য এবং এর ধারাবাহিকতায় বর্তমান রাজনৈতিক, সামাজিক, ও অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটকে তুলে ধরেছে। এর মূল প্রতিপাদ্য হলো ঐতিহাসিক মুক্তি সংগ্রামের বিভিন্ন অধ্যায়কে পর্যালোচনা করে বর্তমান পরিস্থিতির সাথে তার যোগসূত্র প্রতিষ্ঠা করা।
- প্রধান পয়েন্টগুলো:
একাত্তরের গুরুত্ব: মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে গৌরবময় অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত, যা স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম দিয়েছে। এটি একটি ধারাবাহিক সংগ্রামের অংশ, যার শেকড় ১৯৪৭ সালের পাকিস্তান আন্দোলনে।
- মুক্তিযুদ্ধের প্রতিশ্রুতি ও পরবর্তী ব্যর্থতা:
অর্থনৈতিক ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার যে প্রতিশ্রুতি ছিল, তা স্বাধীনতার পর একদলীয় শাসন, দমন-পীড়ন এবং দুর্নীতির কারণে অপূর্ণ রয়ে যায়।
বাহাত্তর সাল থেকেই মুক্তিযুদ্ধের প্রতিশ্রুতির বিচ্যুতি শুরু হয়।
রাজনৈতিক সংকট ও গণতন্ত্রের ঘাটতি:
পঞ্চবার্ষিক নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রের চর্চা সীমাবদ্ধ থাকলেও, ২০১১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল এবং ২০১৪, ২০১৮, ও ২০২৪ সালের বিতর্কিত নির্বাচন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে দুর্বল করেছে।
ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য গুম, খুন, এবং রাষ্ট্রযন্ত্রের অপব্যবহার শাসনব্যবস্থাকে ফ্যাসিবাদী রূপ দিয়েছে।
তারুণ্যের প্রতিবাদ ও ঐতিহাসিক সংযোগ:
কোটাবিরোধী আন্দোলন এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন তরুণ প্রজন্মের বিদ্রোহ হিসেবে চিহ্নিত।
জুলাই মাসের ছাত্র-জনতার মৈত্রী এবং ফ্যাসিবাদবিরোধী এক দফার আন্দোলন একাত্তরের চেতনার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ।
চব্বিশের প্রজন্মের দায়িত্ব:
সাতচল্লিশ, একাত্তর, ও নব্বইয়ের সংগ্রামের ওপর ভিত্তি করে নতুন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের আহ্বান।
বৈষম্য ও ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার অবসান ঘটিয়ে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠা করার দায়িত্ব বর্তমান প্রজন্মের।
মূল প্রতিপাদ্য: বাংলাদেশের ঐতিহাসিক সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় বর্তমান প্রজন্মের ওপর গণতান্ত্রিক ও বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গঠনের দায়িত্ব অর্পিত হয়েছে। একাত্তরের চেতনা কেবল স্বাধীনতা অর্জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে, তা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নতুন প্রজন্মের ভূমিকা অপরিহার্য।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!