চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার ২ নং আলগী দুর্গাপুর উত্তর ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত উত্তর আলগী মৌজায়, জেল নং ২৯, সিট নং ০২ এর প্রান্তিক কৃষকদের একমাত্র সম্বল কৃষিজমিতে নির্মিত হতে যাচ্ছে প্রস্তাবিত শেখ রাসেল স্টেডিয়াম। ওই স্টেডিয়ামের জন্য প্রায় সাড়ে ৩.১৯ একর ভূমি প্রস্তাব করা হয়েছে।
স্টেডিয়াম নির্মিত হলে পাশের জমিসহ প্রায় ৫ একর কৃষিজমি বিনষ্ট হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। প্রস্তাবিত শেখ রাসেল স্টেডিয়ামের জন্য কৃষিজমি অধিগ্রহণ করা হলে কৃষকরা ভূমিহীন হয়ে যাবে। ওই কৃষি জমিতে কৃষকরা বছরে তিন ফসল চাষ করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করেন। তাছাড়া ধান, গম, ভুট্টা, পানের বরজ, পাট ও সবজিসহ বিভিন্ন ধরনের ফসল উৎপাদন করেন। ওই ভূমি থেকে গবাদি পশুর জন্য খড় ও ঘাসের ব্যবস্থা করেন। ভূমিহীন কৃষকরা জমি বর্গা এবং ইজারা নিয়ে তাদের জীবিকা নির্বাহ করেন। অনেকেই যৌথ পরিবারে বসবাস করেন।
ফলে ঘরবাড়ি তৈরির জন্য ওই ভূমি ব্যবহার করতে হবে। অত্র উপজেলার অধিকাংশ জমি নদীর ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে এবং ২ নম্বর উত্তর আলগী ইউনিয়ন ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা হওয়ায় মানুষের জীবনযাপনের ওপর ব্যাপক প্রতিকূল প্রভাব পড়বে। এছাড়া এখানে স্টেডিয়াম নির্মাণ হলে আশপাশের কৃষিজমি বন্যায় প্লাবিত হবে।
এ বিষয়ে কৃষক কালু বলেন, আমাদের জমিতে স্টেডিয়াম হলে আমরা ভাত না খেয়ে মারা যাব।
এছাড়া কৃষক জাফর বলেন, যেখানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ফসলি জমিতে কোনও প্রকল্প করা যাবে না। সেখানে কিছু স্বার্থান্বেষীদের উদর পূর্তির জন্য কৃষি জমিতে প্রকল্প করতেছেন।
এ বিষয়ে আরো কৃষক মিজান বলেন, এই জমির উপর আমার সংসার চলে। তাছাড়া কিছু জমি ইজারা দিয়ে আমার সন্তানের পড়াশোনার খরচ বহন করি।
এমতাবস্থায় কৃষকের চোখে জল, মুখে অসহায়ত্ব আর আর্তনাদ। তাই কৃষকের জীবন ও জীবিকার বিষয় বিবেচনা করে স্টেডিয়ামের জন্য বিকল্প ভূমির অনুরোধ করছি। উল্লেখ্য, অত্র ইউনিয়নের লামছড়ি এবং ৩ নম্বর দক্ষিণ আলগী ইউনিয়নাধীন চরভাঙাসহ একাধিক মৌজায় স্টেডিয়াম করার মতো ভূমি রয়েছে যাতে আপত্তি থাকার মতো নয়।
অতএব, প্রধানমন্ত্রী, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, চাঁদপুর জেলা প্রশাসক ও হাইমচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সুদৃষ্টি কামনা করছি।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!