লাইলাতুল কদর—একটি রাত, যা হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ। এই পবিত্র রাতে মুমিন মুসলমানদের উচিত আল্লাহর দরবারে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করা, ক্ষমা প্রার্থনা করা এবং রহমত কামনা করা। পবিত্র কুরআনে এই রাতের বিশেষ গুরুত্ব সম্পর্কে বলা হয়েছে, এটি এমন এক রাত যেখানে আল্লাহর অসংখ্য রহমত ও বরকত নাজিল হয়।
লাইলাতুল কদরের বিশেষ দোয়া
আম্মাজান হযরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমি নবীজি (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমি যদি জানতে পারি আজ লাইলাতুল কদর, তাহলে কোন দোয়া পড়ব?’
নবিজি (সা.) বললেন, তুমি এই দোয়াটি পড়বে:
اللهم إنك عفو تحب العفو فاعف عني
(উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউয়ুন তুহিব্বুল আফওয়া ফা`ফু আন্নী)
অর্থ: হে আল্লাহ! আপনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল, আপনি ক্ষমা করতেই ভালোবাসেন। সুতরাং আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন। (জামে তিরমিজি -৩৫১৩)
লাইলাতুল কদরে ইবাদতের পদ্ধতি
এই মহিমান্বিত রাতে ইবাদত-বন্দেগিতে মগ্ন হওয়া প্রত্যেক মুসলিমের কর্তব্য। এ রাতে করণীয় কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল হলো:
✔ নফল নামাজ আদায়: যেকোনো সময়ের মতোই নফল নামাজ আদায় করতে পারেন। বিশেষভাবে সালাতুত তাসবিহ পড়ার চেষ্টা করুন। ✔ কুরআন তেলাওয়াত: আল্লাহর বাণী পাঠ করে আত্মার প্রশান্তি লাভ করা যায়। ✔ তাসবিহ-তাহলিল, জিকির-আজকার: আল্লাহর গুণবাচক নাম ও অন্যান্য দোয়া বেশি বেশি পড়ুন। ✔ তাওবা-ইস্তেগফার: নিজের গুনাহ থেকে মুক্তির জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চান। ✔ দরূদ শরিফ পাঠ: রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর প্রতি দরূদ পাঠ করুন। ✔ নিজের ও সারা বিশ্বের মুসলিম উম্মাহর জন্য দোয়া: জীবিত ও মৃত আত্মীয়-স্বজনদের জন্য দোয়া করুন।
বিশেষ নিয়মে নামাজের ভিত্তি নেই
বিভিন্ন প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী, কিছু নির্দিষ্ট সূরা পড়ে বিশেষভাবে নামাজ আদায়ের কথা বলা হলেও, শরিয়তে এর কোনো ভিত্তি নেই। বরং যেকোনো নফল নামাজের মতোই লাইলাতুল কদরের রাতেও দীর্ঘ সময় ধরে কেয়াম, লম্বা রুকু এবং দীর্ঘ সেজদা করা উত্তম।
আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে এই বরকতময় রাতের যথাযথ কদর করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!