শবে কদর ইসলাম ধর্মের অনুসারীদের জন্য এক বিশেষ মর্যাদার রাত। এটি এমন একটি রজনী, যেখানে আল্লাহর অপার রহমত ও বরকত বর্ষিত হয়। ফারসি "শব" অর্থ রাত এবং "কদর" অর্থ সম্মান, মর্যাদা। আরবি ভাষায় একে "লাইলাতুল কদর" বলা হয়, যার অর্থও সম্মানিত রাত। কুরআনের বিভিন্ন সূরায় এই রাতের গুরুত্ব সম্পর্কে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
শবে কদরের ফজিলত
শবে কদরের রাত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও পূণ্যময়। এই রাতে মুসলমানরা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য সারারাত ইবাদতে মগ্ন থাকেন। কুরআন তেলাওয়াত, নফল নামাজ, জিকির, দোয়া এবং তওবা করে তারা নিজেদের অতীত পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন। বলা হয়ে থাকে, এ রাতে এক হাজার মাসের ইবাদতের সমান সওয়াব লাভ করা যায়।
কোন রাতে শবে কদর?
কুরআন ও হাদিসে স্পষ্ট করে উল্লেখ করা হয়নি যে, রমজানের ঠিক কোন রাতে শবে কদর হয়। তবে হাদিস অনুযায়ী, রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোর মধ্যে এটি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, শবে কদরকে ২১, ২৩, ২৫, ২৭ বা ২৯তম রাতে তালাশ করতে। তাই মুসলমানদের উচিত শেষ দশকের প্রতিটি বেজোড় রাতে ইবাদতে রত থাকা।
শবে কদরের বিশেষ দোয়া
এই রাতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আমল হলো দোয়া করা। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে যে, উম্মুল মুমিনিন হযরত আয়েশা (রা.) নবী করিম (সা.)-কে জিজ্ঞেস করেছিলেন, "আমি যদি জানতে পারি যে, কোন রাতটি লাইলাতুল কদর, তাহলে আমি কোন দোয়া পড়বো?" তখন নবী (সা.) তাকে এই দোয়াটি পড়তে বলেন:
اللَّهمَّ إنَّك عفُوٌّ كريمٌ تُحِبُّ العفْوَ، فاعْفُ عنِّي
অর্থ: হে আল্লাহ! আপনি মহান দয়ালু ও ক্ষমাশীল। আপনি ক্ষমা করতে ভালোবাসেন। তাই আমাকে ক্ষমা করুন। (তিরমিজি, হাদিস: ৩৫১৩)
শবে কদরের রাত কীভাবে কাটানো উচিত?
এই পবিত্র রাতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল করা যেতে পারে:
নফল নামাজ আদায় করা
কুরআন তেলাওয়াত করা
তওবা ও ইস্তেগফার করা
দোয়া ও জিকির করা
দরিদ্রদের মাঝে দান-সদকা করা
শবে কদর এমন এক রাত, যখন বান্দার সমস্ত গুনাহ মাফ হওয়ার সুবর্ণ সুযোগ আসে। তাই এই মহিমান্বিত রাতে যথাসম্ভব ইবাদত করা এবং আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের জন্য বিনীতভাবে প্রার্থনা করা উচিত।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!