রোজা শব্দটি ফার্সি ভাষা থেকে এসেছে, যার আরবি অনুবাদ হল সিয়াম। বাংলায় এর অর্থ বিরত থাকা। সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার ও যৌনাচার থেকে বিরত থাকাকেই রোজা বলা হয়। রোজাদার শুধুমাত্র পানাহার থেকেই বিরত থাকবে না, বরং যাবতীয় গুনা থেকেও বিরত থাকতে হবে।
কারণ রাসুলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করেছেন, "যে ব্যক্তি রোজা রাখার পরও মিথ্যা বলা ও খারাপ কাজ করা থেকে বিরত থাকে না, তার পানাহার ত্যাগ করায় আল্লাহর কোনো প্রয়োজন নেই।" (বুখারি)
রোজার বিধান জৈবিক তাড়না থেকে মানুষকে বিরত রাখার জন্য। পেটের মতো চোখ, কান সহ প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ও অনুভূতির সিয়াম পালন করার মধ্যেই রোজার সার্থকতা নিহিত। হারাম কাজ থেকে বিরত রেখে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ও অনুভূতিকে পবিত্র রাখাই রোজার মূল উদ্দেশ্য।
রোজার ফজিলত অপরিসীম। রমজান মাস ছাড়াও সারাবছর রোজা রাখার অনেক ফজিলত রয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, "আমার ও আমার উম্মতের রোজার মাঝে শুধুমাত্র পানি পান করার ফারাক রয়েছে।" (তিরমিযী)
গুনা মাফের মাধ্যম: রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, "যে ব্যক্তি ঈমান ও সওয়াবের আশায় রমজান মাসে রোজা রাখবে, তার অতীতের সকল গুনা মাফ করে দেওয়া হবে।" (বুখারি)
জান্নাতের দরজা খোলে দেওয়া হয়: রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, "যখন রমজান মাস আসে, তখন জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়, জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং শয়তানকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করা হয়।" (বুখারি)
শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা: রোজা রাখার মাধ্যমে অনেক শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা লাভ করা সম্ভব।
পরিশেষে, রোজা রাখা কেবল একটি ধর্মীয় কর্তব্যই নয়, বরং এটি একটি সামাজিক ও নৈতিক দায়িত্বও বটে। রোজার মাধ্যমে আমরা আত্মসংযম, ধৈর্য, ত্যাগ স্বীকার, সহানুভূতি ও সহমর্মিতার গুণাবলী অর্জন করতে পারি।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!