বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপের সৃষ্টি হয়েছে, যা থেকে ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা রয়েছে। রবিবার (২০ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের কাছে এই লঘুচাপটি তৈরি হয়। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, এটি সোমবার রাতে বা মঙ্গলবার সকালে নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে, এবং তার দুই দিনের মধ্যেই ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের নাম হবে ‘দানা’, যা কাতারের দেওয়া। এর অর্থ ‘বিগ পার্ল’ বা বড় মুক্তা।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ দেশ রূপান্তরকে জানান, বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপটি ইতিমধ্যে তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, “লঘুচাপটি নিম্নচাপে রূপ নিলে দুই দিনের মধ্যেই তা ঘূর্ণিঝড়ের আকার ধারণ করতে পারে। তবে এই মুহূর্তে ঘূর্ণিঝড়ের শক্তি বা গতিপথ সম্পর্কে নিশ্চিত কিছু বলা সম্ভব নয়।”
অক্টোবর-নভেম্বর হলো ঘূর্ণিঝড়ের মৌসুম। এই সময়কালে বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির আশঙ্কা থাকে বেশি। এর আগে গত সপ্তাহে একটি নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়েছিল, তবে সেটি বাংলাদেশের দিকে না এসে ভারতের চেন্নাই উপকূলে আঘাত হানে। বর্তমানে তৈরি হওয়া লঘুচাপটি কীভাবে ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হবে, তা আগামীকাল (সোমবার) অনেকটা পরিষ্কার হবে বলে জানান আবহাওয়াবিদরা।
আবহাওয়ার দীর্ঘমেয়াদী পূর্বাভাস অনুযায়ী, চলতি মাসে এক থেকে তিনটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে, যার মধ্যে একটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক জানিয়েছেন, "নিম্নচাপ থেকে ঘূর্ণিঝড় হবে কিনা, তা এখনই নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। তবে যদি তা হয়, এর নাম হবে ‘দানা’, যা কাতারের দেওয়া নাম।"
আবহাওয়াবিদরা মনে করছেন, যদি নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হয়ও, তা খুব বেশি শক্তিশালী হবে না। বিভিন্ন আবহাওয়ার মডেল বিশ্লেষণ করে তারা বলছেন, ঘূর্ণিঝড়টির গতিপথ ভারতের উড়িষ্যা ও পশ্চিমবঙ্গের দিকে হতে পারে। তবে পরিস্থিতি বিবেচনায় ঘূর্ণিঝড়টি বামদিকে মোড় নিলে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলে আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে। যেহেতু নিম্নচাপটি দ্রুত ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, তাই শক্তি বাড়ানোর জন্য যথেষ্ট সময় পাবে না।
আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ বলেন, "আগামীকাল এর গতিবিধি ও শক্তি সম্পর্কে আরও স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে।"
উল্লেখ্য, ১৮৯১ সাল থেকে অক্টোবর মাসে বঙ্গোপসাগরে ৯৪টি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়েছে, যার মধ্যে ১৯টি সরাসরি বাংলাদেশ উপকূলে আঘাত হেনেছে।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!