গাজীপুরের রাজবাড়ি মাঠে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টায় হামলায় নিহত শিক্ষার্থী আবুল কাশেমের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জানাজায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মী, সাধারণ শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা অংশ নেন। উপস্থিত জনতা দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করেন এবং আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের আহ্বান জানান।
শিক্ষার্থীদের রক্ত ঝরল, ন্যায়বিচারের দাবি
নিহত আবুল কাশেম (২০) গাজীপুর মহানগরের দক্ষিণ কলমেশ্বর এলাকার বাসিন্দা হাজি জামালের ছেলে। গত বুধবার গাজীপুরে সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে হামলার শিকার হয়ে আহত হন কাশেম। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা অভিযোগ করেন, এই হামলার পেছনে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম ও সাবেক মন্ত্রী মোজাম্মেল হকের অনুসারীদের হাত রয়েছে। তারা ঘোষণা দেন, কাশেমের রক্তের প্রতিটি ফোঁটার প্রতিশোধ নেওয়া হবে এবং ছাত্রলীগের মতো আওয়ামী লীগকেও নিষিদ্ধ করতে হবে।
বিচারের দাবিতে রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের সরব উপস্থিতি
জানাজায় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন, ছাত্র অধিকার পরিষদ ও হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা বক্তব্য দেন। বক্তারা বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর এমন বর্বর হামলা গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে দমিয়ে রাখতে পারবে না।
ঘটনাস্থলে গাজীপুর মহানগর পুলিশের কমিশনার নাজমুল করিম খান, জেলা প্রশাসন ও সদর থানার কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে হামলাকারীদের আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দেওয়া হয়।
২৩৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেপ্তার ১৩২
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গাজীপুর শাখার আহ্বায়ক মো. আবদুল্লাহ মোহিত হামলার ঘটনায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় ২৩৯ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ২০০-৩০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। প্রধান আসামি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে আওয়ামী লীগকর্মী আমজাদ মোল্লাকে। সর্বশেষ পাওয়া তথ্যে ১৩২ জনকে গ্রেপ্তারের খবর নিশ্চিত করা হয়েছে।
কফিন মিছিলের ঘোষণা
নিহতের জানাজার পর শিক্ষার্থীরা আগামীকাল শুক্রবার শহরে কফিন মিছিলের ঘোষণা দেন। তাদের দাবি, হামলার নির্দেশদাতা ও সরাসরি জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
গাজীপুরের আকাশে নেমে এসেছে শোকের ছায়া, আর শিক্ষার্থীদের কণ্ঠে গর্জে উঠেছে ন্যায়বিচারের দাবিতে অবিচল প্রতিজ্ঞা।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!