সাখাওয়াত উচ্ছাস ইটনা উপজেলা প্রতিনিধি।। ২০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী খেলার মাঠ ও গোচারণভূমি বিক্রির অভিযোগ উঠেছে কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও মৃগা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান দারুল ইসলামের বিরুদ্ধে। তাঁর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় গ্রামবাসীর ওপর হামলার ঘটনাও ঘটেছে। এসব ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন গ্রামবাসী।
আজ বৃহস্পতিবার উপজেলার মৃগা গ্রামের ওই মাঠটিতেই এ মানববন্ধন হয়। এতে বক্তব্য দেন আইনজীবী ও সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর আজিজুল ইসলাম, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন, মৃগা ইউনিয়ন যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সবুজ শেখ, গ্রামবাসী কালি লিটন চক্রবর্তী, কৃষক রমশদ মিয়া প্রমুখ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ইউপি চেয়ারম্যান দারুল ইসলাম ওই গ্রামের ৬৮ দশমিক ৫০ একর গোচারণভূমি ও খেলার মাঠ অবৈধভাবে দখল করে প্লট আকারে বিক্রি করছেন। এ নিয়ে গ্রামবাসী প্রতিবাদ করলে তাঁদের ওপর হামলা চালায় দারুল ইসলামের লোকজন। এ নিয়ে গতকাল বুধবার গ্রামবাসীর বিরুদ্ধেই ইটনা থানায় মামলা করা হয়।
বক্তারা বিডিসিএন২৪.কম জানান, ‘মৃগা গ্রামসহ আশপাশের কয়েক গ্রামের কৃষকেরা এখানে বৈশাখ মাসে ধান মাড়াই-ঝাড়াই করে, খড় শুকায়। সারা বছরই মাঠটি গোচারণভূমি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এ ছাড়া কিশোর ও তরুণেরা এই মাঠে খেলাধুলা করে। এই মাঠটি মৃগা ইউনিয়নের ২০০ বছরের ঐতিহ্য। ২০২২ সালে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাফিসা আক্তারের কাছে আমরা গেলে উনি এখানে এসে জায়গাটিকে মাঠ হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার জন্য চেয়ারম্যান দারুল ইসলামকে নির্দেশনা দেন। পরে চেয়ারম্যান জায়গাটিকে নির্ধারিত খেলার মাঠ হিসেবে ঘোষণা দেন। পরে চেয়ারম্যান দারুল ইসলামের নেতৃত্বে এখান থেকে বালু উত্তোলন শুরু করে। ওই সময় আমরা বাধা দিলে রাজনৈতিক শক্তির কারণে আমরা টিকতে পারিনি।’
এ বিষয়ে মৃগা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক দারুল ইসলামের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘যারা মানববন্ধন করছে তারা একসময় ঘরবাড়ি বানানোর পক্ষে ছিল। এদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ঝামেলা চলছে। আর আমার বিরুদ্ধে আনীত সব অভিযোগ সঠিক নয়।’
ইটনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘শুনেছি জমিটি খাস খতিয়ানের অন্তর্ভুক্ত। খাস খতিয়ানের জমি দখল করে ঘরবাড়ি বানানোর নিয়ম নেই। গ্রামবাসী প্রতিবাদ করলে মৃগা ইউনিয়নে একটি ফৌজদারি অপরাধের ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে একটি মামলা হয়েছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যেন অবনতি না ঘটে এ বিষয়ে কাজ করছি।’
ইটনা ইউএনও দিলশাদ জাহান বলেন, ‘আমি অতিরিক্ত দায়িত্বে আছি। বিষয়টি দেখছি, আগে জানতাম না।’
জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান বলেন, ‘আমি এটা ইউএনওর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিব।’
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!