যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ের পর ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্রুত হোয়াইট হাউসে ফিরে আসার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। দ্বিতীয় মেয়াদে প্রশাসন গঠন এবং নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের পরিকল্পনা নিয়ে দেশ-বিদেশে আলোচনা চলছে। তার নীতিগুলো শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে নয়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মন্ত্রিসভা গঠন এবং গুরুত্বপূর্ণ নিয়োগ
নির্বাচনের পরপরই ট্রাম্প তার মন্ত্রিসভা এবং প্রশাসনিক টিম গঠনে মনোযোগী হয়েছেন। তিনি ইতোমধ্যে জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান হিসেবে সাবেক কংগ্রেসওম্যান তুলসি গ্যাবার্ডকে মনোনীত করেছেন, যিনি তার কট্টর সমর্থক। এছাড়া ইলন মাস্ক এবং বিবেক রামাস্বামীকে নতুনভাবে গঠিত ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট ইফিশিয়েন্সির (ডোজ) দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়রকে, যিনি স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতি দূর করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি হিসেবে মনোনীত হয়েছেন ২৭ বছর বয়সী ক্যারোলিন লেভিত।
কংগ্রেসে রিপাবলিকানদের শক্ত অবস্থান
ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে কংগ্রেসের উভয় কক্ষে রিপাবলিকানদের নিয়ন্ত্রণ তাকে আরও শক্তিশালী করবে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। তবে সিনেটে রিপাবলিকান নেতৃত্ব নিয়ে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব কিছুটা বাধার সৃষ্টি করতে পারে।
অভিবাসন নীতি ও সীমান্ত নিরাপত্তা
মেক্সিকো সীমান্তে প্রাচীর নির্মাণ সম্পন্ন এবং অবৈধ অভিবাসীদের বিতাড়ন ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির কেন্দ্রবিন্দু। তবে এসব নীতি বাস্তবায়নে আইনি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে পারে তার প্রশাসন।
চীন, ইউক্রেন যুদ্ধ এবং আন্তর্জাতিক নীতি
ট্রাম্প চীন থেকে আমদানি করা পণ্যে শুল্ক বৃদ্ধি এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। রাশিয়ার প্রতি কিছুটা নমনীয় থাকলেও ইসরায়েলের প্রতি দৃঢ় সমর্থন তার আন্তর্জাতিক নীতিতে ভারসাম্যের অভাব তুলে ধরছে।
পরিবেশ নীতি এবং অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জ
পরিবেশ সংরক্ষণ নীতিতে কাটছাঁট এবং জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প। এই নীতির কারণে পরিবেশবাদী গোষ্ঠীগুলো তার কঠোর সমালোচনা করেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতামত
ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের নীতি এবং পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি এবং বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার ওপর গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। তার সাহসী ও বিতর্কিত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে আইনগত এবং কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদ যুক্তরাষ্ট্রে নতুন ধরনের শাসনব্যবস্থার সূচনা করতে পারে, তবে এর ব্যর্থতা দেশটির অভ্যন্তরীণ বিভাজন এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অবনতির কারণ হতে পারে।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!