চাঁদের বুকে স্থায়ী মানব বসতি গড়তে পারমাণবিক চুল্লি নির্মাণের পথে এগোচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। নাসা জানিয়েছে, ২০৩০ সালের মধ্যে তারা চাঁদে একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। মহাকাশে টিকে থাকার লড়াইয়ে এটি যুক্তরাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ চন্দ্র অর্থনীতির বড় অংশ বলে মনে করছে সংস্থাটি।
চীনের আগেই দখলে চাঁদ?
নাসার ভারপ্রাপ্ত প্রধান পলিটিকোকে বলেন, চীন ও রাশিয়া চাঁদে ‘কিপ-আউট জোন’ ঘোষণা করতে পারে—এই শঙ্কায় আগে থেকেই সক্রিয় হতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।
তবে সবকিছুই এতটা সহজ নয়। যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক বাজেট কাটছাঁটের কারণে এই উচ্চাকাঙ্ক্ষী পরিকল্পনার বাস্তবতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অনেকে বলছেন, প্রকল্পটি ভূরাজনৈতিক প্রভাব ও প্রতিযোগিতা দ্বারা চালিত।
শক্তির দৌড়ে কে এগিয়ে?
২০২২ সালে নাসা কয়েকটি বাণিজ্যিক কোম্পানির সঙ্গে প্রায় ৫ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি করেছিল চাঁদের জন্য পারমাণবিক চুল্লি ডিজাইনের উদ্দেশ্যে। এখন সংস্থাটি এমন চুল্লির প্রস্তাব চেয়েছে, যা কমপক্ষে ১০০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম। তুলনায়, সাধারণ একটি অনশোর উইন্ড টারবাইন উৎপাদন করে ২-৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ।
চাঁদে সৌরশক্তি দিয়ে নিরবিচারে বিদ্যুৎ সরবরাহ কঠিন, কারণ এক চন্দ্র দিবস পৃথিবীর চার সপ্তাহের সমান—এর মধ্যে দুই সপ্তাহ অন্ধকার থাকে। ফলে পারমাণবিক শক্তিই হতে পারে স্থায়ী সমাধান।
চীন-রাশিয়ার পাল্টা উদ্যোগ
২০২৫ সালের মে মাসে চীন ও রাশিয়া ঘোষণা করেছে, তারা ২০৩৫ সালের মধ্যে চাঁদে একটি স্বয়ংক্রিয় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করবে। তাই শক্তির দৌড়ে পিছিয়ে পড়তে চায় না যুক্তরাষ্ট্র।
বিশেষজ্ঞদের মতে, যে দেশ প্রথম চাঁদে বিদ্যুৎ জোগান দিতে পারবে, তারই হতে পারে মহাকাশে আধিপত্য প্রতিষ্ঠার সুযোগ। সেই লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র দ্রুত এগোচ্ছে তার মহাকাশ প্রকল্প নিয়ে।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!