বর্তমানে তরুণ-তরুণীদের মধ্যে চুল রং করার প্রবণতা একেবারে নতুন নয়। তবে, একাধিকবার চুলের রঙ পরিবর্তন করার পর চুলের স্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। বিশেষ করে, চুলে ব্যবহৃত রাসায়নিক উপাদানগুলির কারণে চুলের ক্ষতি, মাথার ত্বকের সমস্যা এবং পরিবেশের ওপরেও ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে। তাই, চুল রং করার সময় কিছু বিষয় মাথায় রাখা জরুরি। আসুন জানি, কীভাবে চুল রং করার প্রভাব থেকে আপনার চুলকে রক্ষা করবেন।
চুলের ক্ষতি ও ভেঙে যাওয়া: চুল রং করার অন্যতম বড় সমস্যা হলো, নিয়মিত রং করলে চুল দ্রুত নষ্ট হয়ে যেতে পারে। বেশিরভাগ হেয়ার ডাইয়ে ব্যবহৃত রাসায়নিক পদার্থ, যেমন অ্যামোনিয়া ও হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড, চুলের প্রাকৃতিক তেল শুষে নেয় এবং এর ফলে চুল দুর্বল হয়ে পড়ে। এ কারণে চুল ভাঙতে পারে এবং চুলের গোড়া ফেটে যেতে পারে।
মাথার ত্বকে জ্বালাপোড়া ও চুলকানি: চুল রং করার সময় ব্যবহৃত রাসায়নিক উপাদানগুলির কারণে মাথার ত্বকে জ্বালাপোড়া এবং চুলকানির মতো সমস্যা হতে পারে। যদি মাথার ত্বক চুলের রং সহ্য করতে না পারে, তাহলে আপনি ত্বকে জ্বালাপোড়া অনুভব করবেন। এ ধরনের সমস্যার ক্ষেত্রে চুল রং করা বন্ধ করা উচিত।

চুল পাতলা হয়ে যাওয়া: হেয়ার ডাইয়ের রাসায়নিক উপাদানগুলো চুলের গোড়া থেকে প্রাকৃতিক তেল শুষে নেয়, যা চুলের পাতলা হয়ে যাওয়ার কারণ হতে পারে। অ্যামোনিয়া জাতীয় রাসায়নিক চুলের বৃদ্ধিতে বাধা সৃষ্টি করে এবং পাতলা চুল সহজেই ঝরে পড়ে।
স্টাইল করতে সমস্যা: চুল রং করার পর, চুলের স্বাস্থ্য দুর্বল হলে স্টাইল করা কঠিন হয়ে যায়। যখন চুল শুষ্ক এবং উষ্কখুষ্ক হয়ে পড়ে, তখন মনের মতো স্টাইল করা সম্ভব হয় না। নিয়মিত রং করার ফলে চুলের কোমলতা নষ্ট হয়ে যায় এবং চুল ঝরে যাওয়ার আশঙ্কা বাড়ে।
পরিবেশের ক্ষতি: চুলের রং করলেই শুধু চুলের ক্ষতি হয় না, পরিবেশেও বিপদ সৃষ্টি হয়। চুল রং করার রাসায়নিক উপাদানগুলো পানির মাধ্যমে পরিবেশে মিশে যায়, যা জীববৈচিত্র্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
কীভাবে চুলের ক্ষতি ঠেকাবেন? চুলের ক্ষতি ঠেকাতে হলে প্রথমে সচেতনতা প্রয়োজন। সবার আগে, চুলের রং বেছে নেওয়ার সময় প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করার চেষ্টা করুন। যেমন মেহেদি বা অর্গানিক হেয়ার ডাই ব্যবহার করা যায়। এগুলো চুলের জন্য ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদানের চেয়ে অনেক ভালো।
প্যাচ টেস্ট করুন: পুরো চুলে রং লাগানোর আগে, প্রথমে চুলের কিছু অংশে রং লাগিয়ে দেখুন। এর মাধ্যমে আপনি নিশ্চিত হতে পারবেন যে, আপনার ত্বক কোনো ধরনের অ্যালার্জি বা সমস্যা প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে কিনা।
পেশাদারের সাহায্য নিন: চুল নিয়মিত রং করার সময়, নিজে নিজে না করে বিউটি সেলুন বা পেশাদার হেয়ার স্টাইলিস্টের সাহায্য নেওয়া উচিত। তারা জানেন, কোন চুলে কোন প্রোডাক্ট ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত। এটি আপনার চুলের স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্য বজায় রাখতে সাহায্য করবে।
চুল রং করার মাধ্যমে আপনার লুক পরিবর্তন করার সময় স্বাস্থ্য ও পরিবেশের দিকে খেয়াল রাখা জরুরি। প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার এবং সচেতন পদ্ধতিতে রং করলে চুলের ক্ষতি কম হবে এবং আপনি সুন্দর, স্বাস্থ্যকর চুল উপভোগ করতে পারবেন।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!