সাভার, ২৬ মার্চ: মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
আজ (বুধবার) ২৬ মার্চ, বাংলাদেশে ৫৫তম মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপিত হচ্ছে। দিনটির প্রথম প্রহরে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অধ্যাপক ইউনূস। এ সময় এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয় এবং শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
এ উপলক্ষে জাতীয় স্মৃতিসৌধে সর্বস্তরের মানুষ ভিড় জমিয়েছেন। ফুলে ফুলে ভরে উঠেছে স্মৃতিসৌধের মিনার, যা বীর শহীদদের প্রতি জাতির গভীর ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতার প্রকাশ।
রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক কর্মসূচি
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে সরকারিভাবে নানা কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন দিনটি উদযাপনে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। সারাদেশে নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতি পালন করছে তাদের গৌরবের এই দিনটি।
রাষ্ট্রপতি তাঁর বাণীতে বলেন, “স্বাধীনতার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি পরমতসহিষ্ণুতা, মানবাধিকার ও আইনের শাসন সুসংহত করতে হবে। রাষ্ট্র ও সমাজের সব ক্ষেত্রে সাম্য, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা অপরিহার্য।” তিনি আরও উল্লেখ করেন, “জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে তরুণ প্রজন্ম আমাদের স্বাধীনতার অপূর্ণ স্বপ্নগুলো পূরণে আবারও বুকের তাজা রক্ত দিয়ে গেছে। তাদের এই আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আমাদের উচিত একটি সমৃদ্ধ ও উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তোলা।”
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস তাঁর বাণীতে দেশে ও প্রবাসে বসবাসরত সব বাংলাদেশিকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, “দেশকে আরও উন্নত ও শক্তিশালী করতে এবং স্বাধীনতার পূর্ণ সুফল জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে অন্তর্বর্তী সরকার বদ্ধপরিকর। রাষ্ট্রের সব ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংস্কারের মাধ্যমে সুশাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, জনমুখী ও টেকসই উন্নয়ন এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতে আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি।”
স্মারক ডাকটিকিট উন্মোচন
দিবসটি স্মরণীয় করে রাখতে আজ এক বিশেষ স্মারক ডাকটিকিট উন্মোচন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এই ডাকটিকিট বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে সহায়ক হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার সংগ্রাম
১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বাঙালি জাতির ওপর বর্বর হামলা চালায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। তবে বাঙালিরা আত্মসমর্পণ না করে সর্বশক্তি দিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এই প্রতিরোধই চূড়ান্ত স্বাধীনতা সংগ্রামের সূচনা করে। টানা ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৬ ডিসেম্বর আসে বিজয়ের দিন। জন্ম নেয় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।
আজকের দিনটি শুধু আনন্দের নয়, একই সঙ্গে শহীদদের আত্মত্যাগকে স্মরণ করার দিন। তাদের আত্মদানের বিনিময়েই আমরা পেয়েছি স্বাধীন বাংলাদেশ। জাতির এই শ্রদ্ধা ও ভালোবাসাই স্বাধীনতার প্রকৃত মূল্যায়ন।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!