সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি :-
সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার পূর্ব বীরগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা রিয়াজুল ইসলাম ওরফে রাইজুল (৭৪) কারাগারে অসুস্থ হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। গ্রেপ্তারের পর বন্দি অবস্থায় তিনি স্ট্রোক করেন।
পরে তাকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বুধবার (৯ এপ্রিল) রাত ১০টা ২০ মিনিটে তিনি মারা যান।
রিয়াজুল ইসলামের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন তার ভাতিজা আবু বক্কর। তিনি বলেন, লাশ বর্তমানে হাসপাতালের হিমঘরে পুলিশের জিম্মায় রাখা হয়েছে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে কিডনি, হৃদ্রোগ, শ্বাসকষ্টসহ একাধিক জটিল রোগে ভুগছিলেন এবং প্রতিদিন ২২টি ওষুধ সেবন করতেন।
পরিবারের ভাষ্য মতে, গত ৩০ মার্চ ঈদের আগের দিন ইফতারের ঠিক আগে শান্তিগঞ্জ থানা পুলিশ তাকে বাড়ি থেকে আটক করে। কোনো মামলা বা বিরোধ না থাকা সত্ত্বেও তাকে সন্দেহভাজন হিসেবে বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার করা হয় এবং আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
গ্রেপ্তারের সময় রিয়াজুল ইসলামের অসুস্থতার বিষয়টি পুলিশকে জানানো হলেও কেউ গুরুত্ব দেয়নি। এমনকি আদালতে পাঠানোর চালানপত্রেও তার অসুস্থতার কথা উল্লেখ ছিল বলে দাবি পরিবারের। ৪ এপ্রিল পরিবারের কাছে খবর আসে তিনি কারাগারে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন এবং স্ট্রোক করেছেন। তবে বিষয়টি কারা কর্তৃপক্ষ পরিবারকে তিন দিন পরে জানায়।
পরে তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেলে পাঠানো হয়। সেখানে তার মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধায় অস্ত্রোপচার করা হয়। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় বুধবার রাতে তিনি মারা যান।
শান্তিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকরাম আলী বলেন, রিয়াজুল ইসলাম বিশেষ ক্ষমতা আইনে দায়ের করা একটি মামলার সন্দেহভাজন আসামি ছিলেন। তাকে গ্রেপ্তারের পর আদালতে পাঠানো হয় এবং আদালতের নির্দেশেই তাকে কারাগারে নেওয়া হয়। এর বাইরে আমাদের কিছু জানা নেই।
ভাতিজা আবু বক্কর বলেন, চাচা অসুস্থ ছিলেন, আমরা বারবার বলেছি তাকে ঢাকায় নিয়ে যেতে চাই উন্নত চিকিৎসার জন্য। কিন্তু কেউ কথা শোনেনি। একজন অসুস্থ মানুষকে এভাবে গ্রেপ্তার করে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হলো।
রিয়াজুল ইসলামের মৃত্যুর বিষয়ে সুনামগঞ্জ জেলা কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক মো. মঈন উদ্দিন ভূঁইয়া এবং কারাধ্যক্ষ আবু সালাম তালুকদারের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা ফোন ধরেননি।
রিয়াজুল ইসলাম দীর্ঘদিন বেলজিয়ামে ছিলেন এবং সুনামগঞ্জে ফিরে এসে রাজনীতিতে সক্রিয় হন। তিন ছেলে ও দুই মেয়ের সবাই যুক্তরাজ্যপ্রবাসী। সর্বশেষ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তিনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!