নিজস্ব প্রতিবেদক:
নিত্যপণ্যের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধি ও বাজারে অসাধু সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য ঠেকাতে সরকার এবার নতুন একটি শক্তিশালী কমিশন গঠনের পরিকল্পনা করেছে। প্রস্তাবিত এই কমিশনের নাম ‘জাতীয় বাজার স্থিতিশীলতা কমিশন (এনবিএসসি)’—যা বাজার ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা আনবে এবং অবৈধ মূল্য কারসাজি রোধ করবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এই উদ্যোগের পেছনে রয়েছে ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন’, যারা শুধুমাত্র প্রস্তাবই নয়, বরং কমিশনের পূর্ণাঙ্গ রূপরেখা তৈরি করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে।
ইতোমধ্যে এ বিষয়ে একাধিক বৈঠক হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট চারটি প্রতিষ্ঠানের কাছে মতামত চাওয়া হয়েছে।
কারা জড়িত?
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, বিটিটিসি, টিসিবি এবং প্রতিযোগিতা কমিশনের কাছে কমিশনের রূপরেখা পাঠিয়ে মতামত চাইলেও এখনো কোনো প্রতিষ্ঠান আনুষ্ঠানিকভাবে মত দেয়নি। পরবর্তীতে আবারও চিঠি দিয়ে মতামত দিতে অনুরোধ জানানো হয়।
বাজেট ও সহযোগিতা
প্রাথমিকভাবে কমিশন গঠনে ব্যয় ধরা হয়েছে ১০০ থেকে ১৫০ কোটি টাকা। ভবিষ্যতে কমিশনের কাজ বাড়লে বাজেটও বাড়তে পারে। পাশাপাশি কমিশন জাতিসংঘ, বিশ্বব্যাংক ও এডিবি’র মতো উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে অনুদান নেয়ার সুযোগও রাখছে।
রূপরেখায় কী আছে?
কমিশনের উদ্দেশ্য হবে বাজারে ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করা, চাহিদা-সরবরাহের ভারসাম্য রক্ষা, এবং সিন্ডিকেট ও মজুতদারদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া। যারা নিয়মিত সঠিক দামে পণ্য বিক্রি করবে তাদের পুরস্কৃত করা হবে, আর সিন্ডিকেটে জড়িতদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা এবং লাইসেন্স বাতিলের মতো কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হবে।
কমিশনের কাঠামোয় থাকবেন একজন চেয়ারম্যান, নির্বাহী পরিচালক ও একাধিক সদস্য। পরামর্শক প্যানেল, বাজার বিশ্লেষক দল, আইনি কমিটি এবং ভোক্তা সুরক্ষা বিভাগও রাখা হবে।
মতবিরোধ ও মতামত
কিছু সরকারি কর্মকর্তা মনে করছেন, নতুন কমিশন না করে বিদ্যমান সংস্থাগুলোকে আরও কার্যকর করলেই পরিস্থিতি সামাল দেয়া সম্ভব। তবে প্রতিযোগিতা কমিশন থেকে জানানো হয়, তারা তাদের কার্যক্রম আরও গতিশীল করার পরিকল্পনা করছে।
কমিশন গঠনের এই উদ্যোগ মূলত এসেছে ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন’ থেকে, যেটি গঠিত হয় ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে। এর সভাপতি অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং সদ্য পদত্যাগী সিইও মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!