সরকারি শুল্ক-কর বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে সিগারেটের দামে। নতুন শুল্ক-কর পরিশোধ করে সিগারেট প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বাজারে সিগারেট সরবরাহ শুরু করেছে। এর ফলে, খুচরা পর্যায়ে প্রায় সব ধরনের সিগারেটের দাম প্রতি শলাকায় এক থেকে দুই টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
সিগারেটের নতুন দাম
৯ জানুয়ারি অর্থবছরের মাঝপথে সরকার শতাধিক পণ্য ও সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর (মূসক) ও সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর ঘোষণা দেয়। এর মধ্যে সিগারেটও অন্তর্ভুক্ত। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেনসন অ্যান্ড হেজেস ব্র্যান্ডের প্রতি শলাকার দাম ১৮ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ২০ টাকা। গোল্ডলিফের দাম ১৩ টাকা থেকে বেড়ে ১৫ টাকা হয়েছে। লাকি স্ট্রাইকের দাম ১০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ১২ টাকা এবং স্টার ব্র্যান্ডের দাম এখন ১০ টাকা। এছাড়া ডার্বি, পাইলট, ও হলিউড ব্র্যান্ডের সিগারেটের দাম বেড়ে হয়েছে ৮ টাকা, আর রয়্যালসের দাম দাঁড়িয়েছে ৭ টাকায়।
পাইকারি বাজারের নতুন মূল্য
পাইকারি বাজারেও সিগারেটের দাম বেড়েছে। ২০ শলাকার একটি প্যাকেটের নতুন দাম:
বেনসন অ্যান্ড হেজেস: ৩৭০ টাকা
গোল্ডলিফ: ২৮০ টাকা
লাকি স্ট্রাইক: ২১০ টাকা
স্টার: ১৭২ টাকা
ডার্বি, পাইলট, হলিউড: ১৪৪ টাকা
রয়্যালস: ১২৬ টাকা
প্রতি প্যাকেটে ব্র্যান্ডভেদে ২০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে।
শুল্ক বৃদ্ধির বিস্তারিত
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) নির্দেশনা অনুযায়ী, সিগারেটের দাম এবং সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধি করা হয়েছে।
নিম্নস্তরের সিগারেটের প্যাকেটের দাম ৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬০ টাকা করা হয়েছে এবং শুল্ক ৬০ শতাংশ থেকে ৬৭ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।
মধ্যম স্তরের প্যাকেটের দাম ৭০ টাকা থেকে বেড়ে ৮০ টাকা হয়েছে।
উচ্চস্তরের সিগারেটের প্যাকেটের দাম ১২০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ১৪০ টাকা।
অতি উচ্চস্তরের প্যাকেটের দাম ১৬০ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮৫ টাকায়।
রাজস্ব আয় ও শুল্ক প্রভাব
সিগারেট খাত থেকে সরকার ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৩৭,৯১৫ কোটি টাকার শুল্ক-কর আদায় করেছে, যা জাতীয় রাজস্বের বড় অংশ। প্রতিটি শলাকার দামের ৬০ থেকে ৮০ শতাংশই শুল্ক-কর হিসেবে দিতে হয়।
তামাক ব্যবহার ও স্বাস্থ্যঝুঁকি
ওয়ার্ল্ড পপুলেশন রিভিউয়ের ২০২৩ সালের তথ্যমতে, বাংলাদেশে ১৫ বছরের বেশি বয়সী ধূমপায়ীর সংখ্যা ৩৯ শতাংশ। তবে, তামাকবিরোধী প্রচারণাকারী সংস্থা প্রজ্ঞার মতে, তামাক ব্যবহারজনিত রোগে প্রতিবছর দেশে ১ লাখ ৬১ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারান।
সরকারি শুল্ক বৃদ্ধির ফলে সিগারেটের দাম বাড়লেও, ধূমপানের হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমেনি বলে জানান বিক্রেতারা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুল্ক বৃদ্ধি একদিকে রাজস্ব আয় বাড়ালেও, তামাক ব্যবহার রোধে আরও কার্যকর পদক্ষেপ প্রয়োজন।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!