ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) নকশায় রেস্তোরাঁ অনুমোদন না থাকা ভবনগুলোর রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করেছে। সোমবার এ সংক্রান্ত এক গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে করপোরেশন। এতে ঢাকার শত শত রেস্তোরাঁ হঠাৎ করেই আইনি জটিলতায় পড়ে গেছে।
ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. জিল্লুর রহমান জানান, যেসব রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে, সেগুলো এখন বন্ধের প্রক্রিয়া শুরু হবে। তবে সময়সীমা দেওয়া হবে কি না, সে বিষয়ে করপোরেশন ভেবে দেখবে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরকারের অনুমোদন প্রক্রিয়া এতটাই জটিল যে, বেশিরভাগ রেস্তোরাঁ বৈধতা পাওয়ার সব ধাপ মেনে চলতে পারে না। সেই সুযোগে অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নানা হয়রানিতে জড়ায়।
বর্তমানে ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ট্রেড লাইসেন্সধারী রেস্তোরাঁর সংখ্যা ১,০২৬টি। কিন্তু অনেক রেস্তোরাঁর ভবন নকশায় রেস্তোরাঁর অনুমোদন নেই অথবা তাদের ট্রেড লাইসেন্সই নেই।
ডিএসসিসির এক কর্মকর্তা জানান, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সুপারিশে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। লক্ষ্য, ঝুঁকিপূর্ণ রেস্তোরাঁগুলো চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া।
বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান অভিযোগ করে বলেন, “সরকার বৈধভাবে রেস্তোরাঁ পরিচালনার পথ এতটাই কঠিন করে তুলেছে যে, এটি প্রাপ্তি সাধারণ মানুষের জন্য দুঃসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদি এইভাবে অভিযানে নামে করপোরেশন, তাহলে রেস্তোরাঁ বন্ধ করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না।”
উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে, ঢাকায় বৈধভাবে নিবন্ধিত রেস্তোরাঁর সংখ্যা মাত্র ১৩৪টি—যেখানে হাজারের বেশি রেস্তোরাঁ চলমান রয়েছে। বৈধতা পেতে রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীকে সরকারের সাতটি সংস্থার ছাড়পত্র পেতে হয়, যা সময়সাপেক্ষ ও জটিল প্রক্রিয়া।
২০২৪ সালের বেইলি রোডের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৪৬ জন নিহত হওয়ার পর থেকেই এই অনিয়ম নতুন করে আলোচনায় আসে। ওই ভবনের ৮টি রেস্তোরাঁর একটিতেও রেস্তোরাঁর জন্য অনুমোদন ছিল না।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারের উচিত বিনিয়োগকারী, শ্রমজীবী ও নিরাপত্তার সমন্বয় রেখে একটি বাস্তবসম্মত নীতিমালা তৈরি করা। অন্যথায়, নতুন করে অসংখ্য তরুণ উদ্যোক্তা পথে বসবে, কর্মসংস্থান কমবে, আর দুর্নীতি আরও বাড়বে।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!