পুলিশ, র্যাব এবং আনসার বাহিনীর পোশাক পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। আজ সোমবার সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে এই ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
তিনি বলেন, “বাহিনীগুলোর মন-মানসিকতা এবং জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধির জন্য পোশাক পরিবর্তন একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।”
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, পুলিশের নতুন পোশাক হবে লোহার (আয়রন) রঙের, র্যাবের পোশাক হবে জলপাই (অলিভ) রঙের এবং আনসারের পোশাক সোনালি গমের (গোল্ডেন হুইট) রঙের। ধাপে ধাপে এই পরিবর্তন বাস্তবায়ন করা হবে।
ছাত্র-জনতার দাবি থেকে পরিবর্তন শুরু
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকেই পুলিশ বাহিনী সংস্কারের দাবি উঠে। এর ধারাবাহিকতায় পোশাক পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, "পুলিশকে জনবান্ধব করতে হলে বাহিনীর প্রশিক্ষণেও পরিবর্তন আনা হবে। শুধুমাত্র পোশাক নয়, প্রশিক্ষণ, মনোভাব এবং কার্যপ্রণালীতেও সংস্কার আনতে হবে।"
সীমান্তে বিজিবির জন্য কাঁদানে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড
এদিকে সীমান্তে ব্যবহারের জন্য বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সাউন্ড গ্রেনেড এবং কাঁদানে গ্যাস কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে বিএসএফ কাঁদানে গ্যাস এবং সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করছে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, "বিজিবির কাছে কেবল প্রাণঘাতী অস্ত্র রয়েছে, কিন্তু কাঁদানে গ্যাস বা সাউন্ড গ্রেনেড নেই। নতুন এই সরঞ্জাম পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যবহার করবে বিজিবি। তবে সীমান্ত পরিস্থিতি বর্তমানে স্থিতিশীল।"
অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, বর্তমানে বাংলাদেশে ৩৩ হাজার ৬৩৮ জন অবৈধ অভিবাসী অবস্থান করছে, যাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। বৈধ হওয়ার জন্য আবেদন থেকে ইতোমধ্যে ১০ কোটি টাকা আয় হয়েছে। অবৈধ অভিবাসীদের সহযোগিতা করার দায়ে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
এই পরিবর্তনগুলো বাস্তবায়িত হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মক্ষমতা এবং জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সীমান্তের স্থিতিশীলতা রক্ষা আরও সহজ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!