কিশোরগঞ্জের মিঠামইনের হাওর ঘেঁষা ‘প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট’, যা একসময় ডিবি পুলিশের সাবেক প্রধান হারুন অর রশিদের বিলাসবহুল সম্পদ হিসেবে পরিচিত ছিল, এখন পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির ঘটনায় আলোচনায় আসে হারুনের এই রিসোর্ট। বর্তমানে সেখানে রাজত্ব করছে শিয়াল-কুকুর, আর বিশাল এই স্থাপনাটি রূপ নিয়েছে অন্ধকার ভুতুড়ে পল্লিতে।
রিসোর্টের বিলাসী অতীত:
৪০ একরেরও বেশি জায়গায় গড়ে ওঠা এই রিসোর্টে রয়েছে হেলিপ্যাড, অত্যাধুনিক সুইমিং পুল এবং শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ৪০টি কক্ষ। ২০২১ সালে উদ্বোধন হওয়া এই রিসোর্টে প্রিমিয়াম স্যুটের প্রতিদিনের ভাড়া ছিল ২০ হাজার টাকা, আর ডিলাক্স রুমের ভাড়া ১০ হাজার টাকা। রিসোর্টের ব্যবস্থাপনায় ছিলেন হারুনের ছোট ভাই ডা. শাহরিয়ার।
একসময় এটি ছিল মন্ত্রী-এমপি, ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা, সেলিব্রিটি এবং ধনাঢ্যদের জন্য এক 'নিরাপদ আশ্রয়'। সেখানে ছিল বিলাসবহুল গাড়ির বহর ও হেলিকপ্টারের আনাগোনা। তবে এখন সেই জাঁকজমকের ছিটেফোঁটাও নেই।
বর্তমান অবস্থা:
৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পতনের পর হারুন অর রশিদও লাপাত্তা। তার অনুপস্থিতির সঙ্গে রিসোর্টটিও পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে। এখন এটি এক ধরণের আস্তাবলে পরিণত হয়েছে, যেখানে নেই কোনো আলোকসজ্জা বা ব্যস্ততা। স্থানীয়দের মতে, হাওরাঞ্চলের এই বিশাল স্থাপনাটি এখন অন্ধকারে ডুবে আছে এবং শিয়াল-কুকুরের বাসস্থান হয়ে উঠেছে।
সমালোচনার কেন্দ্রে রিসোর্টটি:
বিলাসবহুল এই রিসোর্টটি নির্মাণে কোটি কোটি টাকা ব্যয় এবং হারুনের বিতর্কিত সম্পদের বিষয়টি এখন জনমনে প্রশ্ন তুলেছে। বিলাসী জীবনযাপনের প্রতীক হিসেবে পরিচিত এই রিসোর্টের বর্তমান অবস্থা দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার একটি প্রতীকী চিত্র হয়ে উঠেছে।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!