আজ (বুধবার) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একাধিক হাই-প্রোফাইল রাজনীতিবিদ ও ব্যক্তিত্বের রিমান্ড শুনানিকে কেন্দ্র করে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। সাবেক তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজ এবং সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে আদালতের সামনে নিজ নিজ অবস্থান তুলে ধরেন। আদালত তাদের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে।
পলকের অবস্থান ও অভিযোগ:
জুনাইদ আহ্মেদ পলক আদালতে বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট বাড্ডার একটি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তাঁর কোনো সম্পৃক্ততা নেই। বরং সেদিন তিনি জাতীয় সংসদে ছিলেন এবং রাতে সেনাবাহিনী তাঁকে ও অন্যান্য সংসদ সদস্যদের উদ্ধার করে। তিনি আদালতের কাছে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন জানান।
তুরিনের কান্না ও নির্যাতনের অভিযোগ:
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজ কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে কাঁদতে কাঁদতে জানান, রিমান্ডে থাকাকালীন তাঁকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। তিনি বলেন, তাঁর হাঁটার সমস্যা রয়েছে এবং পায়ে আঘাত করা হয়েছিল। আদালতে তিনি পা দেখিয়ে দাবি করেন, “আমি মিথ্যা বলছি না।”

শাজাহানের স্বাস্থ্য ও বক্তব্য:
সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, তাঁর হৃদযন্ত্রে পাঁচটি ব্লক রয়েছে এবং তিনি অসুস্থ। তিনি বলেন, যদি জিজ্ঞাসাবাদ করতেই হয়, তাহলে জেলগেটে করা হোক। এ সময় আদালতে হট্টগোল সৃষ্টি হয় এবং তাঁকে কটূক্তিও করা হয়।
আইনজীবীদের তীব্র বিতর্ক ও আদালতে হট্টগোল:
সাবেক মন্ত্রীদের বক্তব্য ঘিরে আদালতজুড়ে শুরু হয় আইনজীবীদের তর্ক-বিতর্ক ও হট্টগোল। ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত ‘ছাত্রলীগ’ উচ্চারণ করার পরই আদালতে উপস্থিত কিছু আইনজীবী ‘জঙ্গি ছাত্রলীগ’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন।
পিপির পাল্টা বক্তব্য:
ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী পাল্টা বক্তব্যে দাবি করেন, তুরিন আফরোজ নির্যাতনের মিথ্যা অভিযোগ করেছেন এবং পলক হত্যার ষড়যন্ত্রে জড়িত। তিনি বলেন, “ফ্যাসিস্ট হাসিনার ঘনিষ্ঠজনদের সবাই জড়িত।”
আদালতের পরিবেশ উত্তপ্ত থাকলেও বিচারক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করেন এবং রিমান্ড শুনানির সিদ্ধান্ত দেন।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!