চট্টগ্রামে ১ নভেম্বর থেকে পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ হওয়ার পরেও কাঁচাবাজারে তার ব্যবহার থেমে নেই। পরিবেশ অধিদপ্তর এবং জেলা প্রশাসন পলিথিন বন্ধে নানা পদক্ষেপ নিলেও বিকল্প না থাকার অজুহাতে দোকানিরা এখনও পলিথিনে পণ্য সরবরাহ করছেন।
গত অক্টোবর থেকে সুপারশপে পলিথিন নিষিদ্ধ করা হলেও, কাঁচাবাজারের বাস্তবতায় তা কার্যকর করা যাচ্ছে না। প্রশাসন পলিথিন নিষিদ্ধকরণের জন্য ব্যাপক অভিযান চালালেও, বাজারের অবস্থা প্রায় অপরিবর্তিত। ৩ নভেম্বর চট্টগ্রামের আকবরশাহ এলাকা থেকে ১১৬ কেজি পলিথিন জব্দ করা হলেও, ৪ নভেম্বর বিভিন্ন সুপারস্টোরে অভিযান চালানো হলেও সেখানে পলিথিনের ব্যবহার পাওয়া যায়নি। কিন্তু কাঁচাবাজার, মুদিদোকান ও মাছ-মাংসের দোকানে এখনও পলিথিন ব্যবহার করা হচ্ছে।
চট্টগ্রাম পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক সোনিয়া সুলতানা জানিয়েছেন, "পলিথিন ব্যবহার বন্ধ করতে আমরা সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি অভিযান চালাচ্ছি, তবে মানুষের অভ্যস্ততা বদলাতে সময় লাগবে। বিকল্প হিসেবে কিছু কাগজ ও অন্যান্য উপাদানের ব্যাগ প্রদর্শন করা হয়েছে।" তবে কাঁচাবাজারে এখনও বিকল্প ব্যাগের ব্যবহার দেখা যাচ্ছে না। চকবাজার, রেয়াজউদ্দিন বাজার, অক্সিজেন নয়াহাট সহ নানা বাজারে বিক্রেতারা পলিথিনে সবজি, মাছ, মাংস ইত্যাদি দিচ্ছেন।
নয়াহাট বাজারের মুদিদোকানি মো. জাবেদ আলম জানান, “আমরা পলিথিন ব্যবহার কম করার চেষ্টা করছি, কিন্তু বিকল্প প্যাকেট নেই। পলিথিন ছাড়া অন্য কিছুতে পণ্য সরবরাহ করা সম্ভব নয়।”
অন্যদিকে, চট্টগ্রামের পলিথিন উৎপাদনকারীরা প্রশাসনের অভিযানের মুখে হলেও আবারও পলিথিন উৎপাদন ও বাজারে বিক্রি অব্যাহত রেখেছেন। জেল রোডের বিসমিল্লাহ পলিথিন কারখানার মালিক মো. শাখাওয়াত দাবি করেছেন, তারা পাতলা পলিথিন তৈরী করেন না, তবে কিছু কারখানা এখনও পাতলা পলিথিন তৈরি করে।
সাম্প্রতিক সময়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ফারহিনা আহমেদ বলেছেন, “পলিথিনের কারণে সমুদ্রের বাস্তুসংস্থান নষ্ট হচ্ছে এবং মানুষের শরীরে মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া যাচ্ছে।” তিনি আরও জানান, ২০০২ সালে পলিথিন নিষিদ্ধ হলেও, বাস্তবায়ন এখনও অনেক দূরে।
এভাবে পলিথিনের অবাধ ব্যবহার কেবল পরিবেশের জন্যই নয়, মানুষের স্বাস্থ্যও হুমকির মুখে পড়ছে। চট্টগ্রামসহ সারাদেশে এর কঠোর বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবি।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!