অকাল বন্যার কবল থেকে হাওরাঞ্চলে ব্যাপক অর্থনৈতিক ক্ষতির প্রেক্ষাপটে নদীতে বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হলেও বর্তমানে বাণিজ্যিক স্বার্থ হাসিলের জন্য ব্যাপক হারে বাঁধ নির্মাণ হুমকিতে ফেলছে বিস্তীর্ণ অঞ্চলের সমৃদ্ধ জীববৈচিত্র্যকে।
ভেড়ামোহনা নদী আজমিগঞ্জের মেঘনা থেকে উৎপত্তি হয়ে কাকাইল ছেও হয়ে বানিয়াচংয়ের পশ্চিমাংশ দিয়ে কিশোর গঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম হয়ে মেঘনায় মিলিত হয়েছে। অষ্টগ্রামের কদমচাল বাজার ব্যবসায়ীরা ভেড়ামোহনা নদীতে বাধঁ দেওয়ার ফলে, এক সময়ের প্রবাহমান উত্তাল নদী পলি পড়ে নাব্যতা হারিয়েছে। অতি বৃষ্টি হলে বানিয়াচংয়ের বোরো ফসল জলাবদ্ধতায় নষ্ট হয়ে য়ায়।
দেখা দেয় অকাল বন্যা। বানিয়াচংয়ের ১৫ নং পৈলার কান্দি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি এমদাদ মাষ্টার জানান,উক্ত স্হানে বাধেঁর ফলে নৌযোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।কুমড়ী ও বিথঙ্গল বাজারের ব্যবসায়ীরা ভৈরব থেকে নৌপথে পণ্য আমদানি করেন। বাঁধের কারণে পণ্য আমদানি বন্ধ রয়েছে। বাঁধের কারণে মাছসহ জলজ প্রাণীর বিলুপ্তির হওয়ার সম্ভাবণা রয়েছে। একমাত্র বানিজ্যিক কৃত্রিম বাঁধ নির্মাণে পরিবেশের ওপর সবচেয়ে বিরূপ প্রভাব পড়েছে। পানির স্বাভাবিক গতিপ্রবাহে বিঘ্ন ঘটিয়েছে ।
জল ও পললপ্রবাহ বাঁধ নির্মাণের কারণে নিম্ন স্রোতের দিকে ধাবিত হয় এবং একটি নদীর মোহনাকে ধীরে ধীরে চরাঞ্চলে পরিণত করে। ফলে নদীতে পলির প্রবাহ হ্রাস পাওয়ার পাশাপাশি ভূপৃষ্ঠে জলাবদ্ধতাও ত্বরান্বিত হয়। দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতায় সৃষ্টি হয় বিভিন্ন ধরনের দূষণ। বাঁধগুলোর সবচেয়ে ক্ষতিকর দিক হলো এটি একটি নদীর গতিশীলতা ও কার্যকারিতা পরিপূর্ণভাবে নষ্ট করে দেয়। বাঁধের কারণে নদীপৃষ্ঠে পলি জালের মতো বিছিয়ে যায়।
বিশেষ করে প্রবাহমান নদীর তলদেশের মাটির গঠন প্রকৃতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলে। বাঁধের কারণে নদী খণ্ডিত হওয়ায় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ও জলজ প্রাণীর স্থানান্তর বাধাগ্রস্ত হয়। যাদের কারো কারো প্রজনন মৌসুমে বিচরণ করতে হয় গভীর পানির মোহনায়। প্রজননক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হওয়ায় অনেক প্রজাতির পরিমাণ এ কারণেই বানিয়াচংয়ের জলাশয়গুলোতে কমছে নিয়মিত হারে। অনেক প্রজাতি বিলুপ্তও হচ্ছে প্রতি বছর।তাই বানিয়াচং বাসী কদম চালের বাধঁ কেটে নদীর পানি প্রবাহ বহমান রাখার দাবী জানিয়েছেন।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!