নামাজ ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এটি বেহেশতের চাবি এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভের মাধ্যম। নামাজ আদায় না করে জান্নাতের আশা করা যায় না। আল্লাহ তাআলা কোরআনে নামাজের বিষয়ে উদাসীনদের জন্য কঠিন পরিণতির কথা উল্লেখ করেছেন। এমনকি যুদ্ধের মতো কঠিন পরিস্থিতিতেও তিনি জামাতে নামাজ আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন।
যুদ্ধের মাঝেও জামাতে নামাজের তাগিদ
রসুলুল্লাহ (সা.)-কে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন যুদ্ধের সময়ও নামাজ আদায় না করতে নিষেধ করেছেন। যুদ্ধের সময় কীভাবে নামাজ পড়তে হবে, সেই নির্দেশনাও দিয়েছেন। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে:
“(হে নবী,) আপনি যখন তাদের মধ্যে উপস্থিত থাকেন এবং তাদের নামাজ পড়ান, তখন মুসলিমদের একটি দল আপনার সঙ্গে দাঁড়াবে এবং নিজেদের অস্ত্র সঙ্গে রাখবে। অতঃপর তারা যখন সেজদা করে নেবে, তখন তারা তোমাদের পেছনে চলে যাবে এবং অন্য দল, যারা এখনো নামাজ পড়েনি, সামনে এসে যাবে এবং তারা আপনার সঙ্গে নামাজ পড়বে। তারাও নিজেদের আত্মরক্ষার উপকরণ ও অস্ত্র সঙ্গে রাখবে।” (সুরা নিসা, আয়াত ১০২)
জামাতে নামাজের গুরুত্ব ও সতর্কবার্তা
জামাতে নামাজ আদায়ের ব্যাপারে মহানবী (সা.) কঠোরভাবে সতর্ক করেছেন। তিনি বলেছেন, “যে ব্যক্তি আজান শুনে, কোনো বৈধ অপারগতা না থাকা সত্ত্বেও জামাতে উপস্থিত হলো না, তার নামাজ হবে না।” (ইবনে মাজাহ ৭৯৩)
আল্লাহর নির্দেশনা অনুযায়ী, জামাতে নামাজ আদায় করা ওয়াজিব, এবং বিনা কারণে তা ছেড়ে দেওয়া বড় অপরাধ। আল্লাহ বলেন, “তোমরা নামাজ কায়েম করো এবং জাকাত দাও এবং যারা রুকু করে তাদের সঙ্গে রুকু করো।” (সুরা বাকারা, আয়াত ৪৩)
জামাতে নামাজের সওয়াব একক নামাজের চেয়ে ২৭ গুণ
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “জামাতে নামাজ আদায় করা একাকী নামাজের চেয়ে ২৭ গুণ বেশি সওয়াব।” (বুখারি হাদিস ৬৪৫, মুসলিম হাদিস ৬৪০)
তিনি আরও বলেন, “আজান দেওয়া এবং প্রথম কাতারে দাঁড়ানোর মর্যাদা যদি মানুষ জানত, তাহলে তা পাওয়ার জন্য তারা লটারি করত। দুপুরের নামাজের মর্যাদা যদি তারা জানত, তাহলে প্রতিযোগিতা করত। আর এশা ও ফজরের নামাজের মর্যাদা যদি তারা জানত, তাহলে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও এসে নামাজে উপস্থিত হতো।” (মুসলিম হাদিস ৮৬৭)
১৪ কারণে জামাতে শরিক না হওয়ার অনুমতি
কিছু বিশেষ কারণে জামাতে শরিক না হলে একজন ব্যক্তি গুনাহগার হবেন না। যেমন: ১. অসুস্থতা, ২. হাত-পা কেটে যাওয়া, ৩. অন্ধত্ব, ৪. প্যারালাইসিস, ৫. দুর্বলতা, ৬. অতিবৃষ্টি, ৭. কর্দমাক্ত রাস্তা, ৮. তীব্র শীত, ৯. ভয়ানক অন্ধকার, ১০. সম্পদের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা, ১১. মানহানির ভয়, ১২. প্রাণনাশের ভয়, ১৩. সফরে রওনা করা, ১৪. ট্রেন বা ফ্লাইট মিস হওয়ার আশঙ্কা। (বোখারি ১১২৬, আবু দাউদ ৪৬৪, ইবনে মাজাহ ৭৮৫)
নামাজকে গুরুত্ব দিয়ে আদায় করুন, বিশেষ করে জামাতে, কারণ এতে রয়েছে অপার সওয়াব ও আল্লাহর বিশেষ সন্তুষ্টি।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!