ইসলামে সালামের গুরুত্ব অপরিসীম। এটি শুধু একটি অভিবাদন নয়, বরং পরস্পরের প্রতি দোয়া, কল্যাণ ও ভ্রাতৃত্ববোধের প্রকাশ। 'আস-সালামু আলাইকুম' অর্থ হলো ‘আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক’। ইসলামে অভিবাদন জানানোর জন্য সালামকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
ফুকাহায়ে কেরাম বলেন, সালাম দেওয়া সুন্নাত এবং এর উত্তর দেওয়া ওয়াজিব। মহান আল্লাহ কোরআনে ইরশাদ করেছেন,
"সুতরাং তোমরা যখন গৃহে প্রবেশ করবে, তখন তোমরা তোমাদের স্বজনদের প্রতি সালাম করবে অভিবাদন স্বরূপ, যা আল্লাহর নিকট হতে কল্যাণময় ও পবিত্র।" (সুরা নুর- ২৪:৬১)
এছাড়া আল্লাহ আরও বলেন,
"আর যখন তোমাদেরকে অভিবাদন করা হয়, তখন তোমরাও তা অপেক্ষা উত্তম অভিবাদন করবে অথবা অনুরূপই করবে।" (সুরা নিসা: ৮৬)
রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, মুসলমানের ওপর অপর মুসলমানের ছয়টি হক রয়েছে। এক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করলেন, "তা কী কী?" রাসুলুল্লাহ বললেন, "যখন তার সঙ্গে দেখা হবে, তখন তাকে সালাম দেবে।" (মুসলিম: ২১৬২)
সালাম শুধু একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়, এটি পারস্পরিক হৃদ্যতা ও সৌহার্দ্য বৃদ্ধির মাধ্যম। এটি হিংসা-বিদ্বেষ ও শত্রুতা দূর করে। রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,
"সেই সত্তার কসম, যার হাতে আমার প্রাণ রয়েছে! তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করবে না যতক্ষণ না তোমরা মু’মিন হবে। এবং তোমরা মু’মিন হতে পারবে না যতক্ষণ না একে অপরকে ভালোবাসবে। আমি কি তোমাদেরকে এমন কাজ বলে দেব না, যখন তোমরা তা করবে, তখন তোমরা একে অপরকে ভালোবাসতে লাগবে? তোমরা পরস্পরের মধ্যে সালাম প্রচার কর।" (মুসলিম ৫৪, তিরমিজি ২৬৮৮, আবু দাউদ ৫১৯৩, ইবনু মাজাহ ৬৮, ৩৬৯২)
সালামের মাধ্যমে শুধু দোয়া হয় না, বরং এটি ইসলামী সমাজ ব্যবস্থার এক অনন্য বৈশিষ্ট্য, যা মুসলমানদের মাঝে ভ্রাতৃত্ববোধ গড়ে তোলে। তাই আমাদের উচিত বেশি বেশি সালাম দেওয়া এবং এর প্রচলন করা।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!