চাঁদপুর হাজীগঞ্জ উপজেলার টোরাগড় কাজী বাড়ির সিরাজ মিয়ার ছেলে মোঃ তুহিন এর বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভনে এক নারীক ধর্ষণের অভিযোগ উঠে। এই নিয়ে হাজীগঞ্জ উপজেলার সুদিয়া গ্রামের মৃত বাচ্চু মিয়ার মেয়ে ভুক্তভোগী শারমিন আক্তার (২৫) নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধীত-২০২৫) এর ৯ (খ)ধারায় বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল, চাঁদপুরে ৯ নভেম্বর মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ২২৯/২০২৫। বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামলাটি সিআইডি তদন্ত করে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে আদালতে রিপোর্ট প্রদানের জন্য নির্দেশ দেন। বর্তমানে মামলাটি সিআইডিতে তদন্ত অবস্থায় রয়েছে।
মামলার বিবরন থেকে জানা যায় দেড় বছর আগে ভুক্তভোগী শারমিন আক্তার তার সংসারের অভাব অনটনের কারনে কর্ম করার সিধান্ত নেয়। কর্মের খোঁজে পরিচয় হয় হাজীগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী একটি এনজিওর মালিক টোরাগড় কাজী বাড়ির সিরাজ মিয়ার ছেলে মোঃ তুহিন'র (৩৫) সঙ্গে। নারী লোভী তুহিন শারমিন আক্তারের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে চাকুরী দেওয়ার কথা বলে তার সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলে। দেখাতে থাকে একের পর এক মিথ্যা প্রলোভন। শেষপর্যন্ত লম্পট তুহিন শারমিনকে এনজিওয় মালিকের বউ হওয়ার প্রলোভন দেখাতে থাকে। শারমিনকে বিয়ে করার প্রলোভন দেখিয়ে তার বর্তমান স্বামীকে তালাক দিতে বাধ্য করে। বিগত ০৫/০৪/২০২৪ তারিখ শুক্রবার রাত ১০ ঘটিকায় বিবাহের প্রলোভন দেখিয়ে স্বামী স্ত্রীর পরিচয় দিয়ে হাজীগঞ্জে বাসা ভাড়া করে। সে খানে সে একাধিক বার ধর্ষণ করে। এভাবে হাজীগঞ্জ বাজারে বিভিন সময় বিভিন্ন ভাড়াটিয়ার বাসায় রেখে প্রায় দেড় বছর পর্যন্ত বিবাহ করার কথা বলে ধর্ষন করে। শারমিন আক্তার তুহিনকে বিবাহ করার জন্য চাপ প্রয়োগ করলে তুহিন বিবাহ করিবে না বলিয়া সাফ জানিয়ে দেয়। তার স্ত্রী সন্তান রয়েছে বলে জানান। তার স্ত্রী কান্সারে আক্রান্ত রয়েছে। শারমিন আক্তার বিবাহের জন্য অনুনয় বিনয় করলেও তুহিন শারমিনকে মাইরধোর করে বিবাহ করবে না বলে জানান। আহত অবস্থায় শারমিন আক্তার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে বিগত ২৯/১০/২০২৫ইং তারিখে ভর্তি হন।
শারমিন আক্তার এর পক্ষে চাঁদপুর বারের বিজ্ঞ আইনজীবী মোঃ কামাল হোসেন জানান ভিকটিম শারমিন আক্তার এর প্রতি ইনজাস্টিস করা হয়েছে। আমরা ভুক্তভোগী শারমিন আক্তারের ন্যায় বিচার চেয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধীত-২০২৫) এর ৯ (খ)ধারায় বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল, চাঁদপুরে মামলা দায়ের করেছি। মামলাটি বর্তমানে সিআইডিতে তদন্ত অবস্থায় রয়েছে। তদন্তের মাধ্যমে ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন হবে। আসামী পক্ষ যতই প্রভাবশালী হোক না কেন বাদীপক্ষ আদালতের মাধ্যমে ন্যায়বিচার পাবে বলে আমি আশাবাদী।
মামলার তদন্তকারী সিআইডির উপপরিদর্শক দিগন্ত জানান আদালতে নির্দেশ অনুয়ায়ী আমরা মামলাটি তদন্ত করতেছি। আমরা প্রাথমিকভাবে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। আদালতের অনুমতি নিয়ে খুব শীগ্রই আমরা ভিকটিমকে মেডিকেল টেস্ট করাব। আমরা চাই প্রকৃত ঘটনা উদঘাটিত হোক। যা সঠিক সেই রিপোর্ট ই আমরা আদালতে প্রেরণ করব।
ভোক্তভোগী শারমিন আক্তার জানান তুহিন আমাকে প্রলোভন দেখিয়ে এই দেড় বছরে আমার জীবনটা শেষ করে দিয়েছে। সে বিবাহিত, তার স্ত্রী সন্তান রয়েছে সে এই সব কিছুই গোপন রেখেছে। এরপরেও আমি তার সাথে বিবাহ করে সংসার করতে রাজি থাকলেও সে বিবাহ করতে রাজি হয় না। পরে ভালো করে খোঁজ খবর নিয়ে দেখি তার বউ কান্সারে আক্রান্ত থাকায় সে অনেক মেয়ে জীবন এই ভাবে নষ্ট করেছে। আমি বাধ্য হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করি। আমি মামলা কেন করেছি মামলা তুলে নেয়ার জন্য তুহিন তার বন্ধু রহমত, মনির, মাসুদ, রাজু সহ বিভিন্ন লোক দিয়ে ভয়ভীতি সহ চাপ সৃষ্টি করে যাচ্ছে। মামলা না তুললে আমাকে মেরে ফেলারও হুমকি দিচ্ছে। মামলার স্বাক্ষীদের স্বাক্ষী না দেওয়ার জন্য ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। আমার বাসায় বিভিন্ন লোক পাঠাচ্ছে। রাস্তাঘাটে লোক দিয়ে ভিডিও করাছে। আমি চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মোঃ তুহিন এর নিকট বক্তব্যের জন্য গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। তার ব্যবহার করা এয়ারটেল নাম্বারে কল দিলে তা বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
লগইন
হাজীগঞ্জে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ, আদালতে মামলা-তদন্তে সি আই ডি
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!