শেখ হাসিনা সরকারের আমলে নিয়োগ পাওয়া পুলিশ সদস্যদের বিষয়ে গোপন তদন্ত চালাচ্ছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। বিশেষ করে, সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া বিসিএস ক্যাডার কর্মকর্তাদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা ও ব্যক্তিগত অতীত ইতিহাস যাচাই করা হচ্ছে। নন-ক্যাডার পুলিশ সদস্যদের নিয়েও চলছে এই অনুসন্ধান।
গতকাল পুলিশ সদর দপ্তরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নিশ্চিত করেন যে, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে পুলিশের মধ্যে দলীয়করণের অভিযোগ উঠেছে। এসব নিয়োগে রাজনৈতিক পরিচয়ে অনেককে বিশেষভাবে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে বলেও দাবি করা হচ্ছে।
সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ও পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশনায় এই তদন্ত কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে, ২০১০ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ১১টি বিসিএস পরীক্ষায় নিয়োগ পাওয়া সহকারী পুলিশ সুপারদের (এএসপি) বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। এর পাশাপাশি উপপরিদর্শক (এসআই), সার্জেন্ট ও কনস্টেবল নিয়োগ প্রাপ্তদের বিষয়ে ধীরে ধীরে অনুসন্ধান প্রক্রিয়া শুরু করা হবে বলে জানা গেছে।
রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার তথ্য যাচাই
গোপন এই তদন্তে প্রার্থীদের নাম, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, মোবাইল নম্বর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বন্ধুদের তথ্যসহ অতীতে তাদের কোনো রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা ছিল কিনা, তা নির্ধারণ করা হচ্ছে। এ ছাড়া প্রার্থীর পরিবার ও নিকটাত্মীয়দের পেশা এবং সম্পর্কের বিস্তারিত বিবরণও নেওয়া হচ্ছে।
বিতর্কিত নিয়োগ ও সমাপনী কুচকাওয়াজ স্থগিত
৪০তম বিসিএসে নিয়োগপ্রাপ্ত ৭১ জন এএসপির মধ্যে ৬২ জনই ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ছিলেন বলে জানা যায়। এতে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হলে তাদের সমাপনী কুচকাওয়াজ সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়।
তদন্তের আওতায় ২৮ থেকে ৪১তম বিসিএসে নিয়োগ পাওয়া সদস্যদের নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। এ ছাড়া ২০২৩ সালের ৪১তম বিসিএসে এএসপি পদে নিয়োগপ্রাপ্তদের মধ্যেও ছাত্রলীগের নেতাকর্মী থাকার অভিযোগ উঠেছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক ইনামুল হক সাগর জানিয়েছেন, এই ধরনের গোপন তদন্ত সম্পর্কে তার জানা নেই। তবে বিভিন্ন সূত্র থেকে ধারণা পাওয়া যায়, এই তদন্ত চলমান প্রক্রিয়া হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!