হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং থানায় চুরির মামলার আসামি গোলাম রাব্বানীর (১৮) মৃত্যুর ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) হাসিবুল ইসলামকে প্রধান করে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামীকাল শুক্রবারের মধ্যে তদন্তের রিপোর্ট দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশ সুপার মো. আক্তার হোসেন।
কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বানিয়াচং সার্কেল) পলাশ রঞ্জন দে ও কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক মো. কামরুল ইসলাম।
এর আগে, একটি টমটম চুরির মামলায় গত মঙ্গলবার দুপুরে বানিয়াচং উপজেলার নন্দিপাড়া গ্রামের মহিউদ্দিন মিয়ার ছেলে গোলাম রাব্বানীকে গ্রেপ্তার করেন উপপরিদর্শক (এসআই) মনিরুল ইসলাম। তাকে হাজতখানায় না রেখে পাশের একটি কক্ষে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রাখা হয়।
এ বিষয়ে বানিয়াচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার হোসেন জানান, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাব্বানীকে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় গেঞ্জির ফাঁস লাগানো অবস্থায় পাওয়া যায়। হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
রাব্বানীর বড়ভাই মোহাম্মদ মঈন উদ্দিন বলেন, ‘গত মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে বাড়ির সামনে থেকে জিজ্ঞাসাবাদের কথা বলে পুলিশ আমার ভাইকে তুলে আনে। তবে আমরা পরিবারের কেউ বিষয়টি জানতাম না। সন্ধ্যা ৭টার দিকে আমরা জানতে পারি সে বানিয়াচং থানায় আছে। তখন আমার মা থানায় যান। থানা থেকে আমার মাকে জানানো হয় রাব্বানীর বুকে ব্যথা। তাই তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। রাত ১০টার পর বানিয়াচং থানা থেকে জানানো হয়- রাব্বানী থানার রেস্টরুমে তার স্যান্ডো গেঞ্জি ও কোমরের বেল্ট খুলে ফ্যানের সঙ্গে বেঁধে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার ভাইয়ের পুরো শরীর ক্ষত-বিক্ষত করেছে তারা (পুলিশ সদস্যরা)। সারা শরীরে শুধু লাঠির আঘাত ও নির্যাতনের চিহ্ন।’
এদিকে, গোলাম রাব্বানীকে গ্রেপ্তারের কথা স্বীকার করলেও এ বিষয়ে পরে জানাবেন বলে ফোন কেটে দেন এসআই মনিরুল ইসলাম।
জানা গেছে, গত মঙ্গলবার রাতে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে গোলাম রাব্বানীর সুরতহাল হয়। গতকাল বুধবার হবিগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে তার ময়নাতদন্ত শেষে ওইদিন বিকেলে পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়। বাদ মাগরিব বানিয়াচং সদরের নন্দীপাড়া এলাকার বিবির মোকাম জামে মসজিদ প্রাঙ্গনে তার নামাজে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
তবে ময়নাতদন্ত সম্পর্কে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালের আরএমও ডা. নাজমা আক্তার কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
ওসি দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘এ ঘটনায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। রাব্বানীর বিরুদ্ধে ৭-৮টি চুরির মামলা রয়েছে।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!