নওগায় গ্রাহকের ২০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় আব্দুর রাজ্জাক নামে এক এনজিও পরিচালকসহ ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। গ্রেফতার আব্দুর রাজ্জাক সদর উপজেলার ফতেপুর বাজারে ডলফিন সেভিংস এন্ড ক্রেডিট কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড নামে একটি এনজিও খুলে গ্রাহকের প্রায় ২০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে লাপাত্তা ছিলেন। এসময় তিনি টাকাগুলো নিয়ে দুবাইগামী বিমানে দেশের বাহিরে যাওয়া পরিকল্পনা করছিলেন।
রবিবার (১৮ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে নওগাঁ সার্কিট হাউজে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র্যাব-৫ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস।
এর আগে শনিবার রাতে নারায়নগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ থানার তারাব বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে আব্দুর রাজ্জাককে এবং নওগাঁ জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে অপর ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়।গ্রেফতার অপর ব্যক্তিরা হলেন- নওগাঁর ফতেহপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রাজ্জাক, তার স্ত্রী সুমি বেগম , আব্দুল মজিদের ছেলে রিপন, রজাকপুরের গিয়াস উদ্দিনের ছেলে পিয়ার আলী, তার স্ত্রী শিল্পি বেগম ও ইকরতারা এলাকার লায়েব উদ্দিনের ছেলে আতোয়ার রহমান আতা ।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৫ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস বলেন, র্যাব জানতে পারে আব্দুর রাজ্জাক ২০১৩ সালে ফতেপুর বাজারে ডলফিন নামে একটি সংস্থা গড়ে তোলেন। এরপর গ্রামের সহজ সরল মানুষকে প্রতিমাসে এনজিও থেকে অধিক মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে প্রায় ২০ কোটি টাকা আমানত সংগ্রহ করেন। তাদের প্রলোভনে ওই এনজিওতে এলাকার অনেকেই বড় অংকের টাকা আমানত জমা করেন। প্রথম তিন মাস গ্রাহকরা জমানো টাকার মুনাফা পেলেও পরবর্তীতে মুনাফা বন্ধ হয়ে যায়।
মুনীম ফেরদৌস বলেন, এরপর গ্রাহকের আমানত নিয়ে হঠাৎ করেই সংস্থারটির পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক অফিসে তালা ঝুলিয়ে তিনশো’র বেশি গ্রাহকের ২০ কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যায়। খবর পেয়ে র্যাব-৫ এবং র্যাব-১১ এর গোয়েন্দা দল তাদের উপর গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করে। একপর্যায়ে গোপন সংবাদে নারায়ণগঞ্জ থেকে আব্দুর রাজ্জাককে আটক করা হয়। তিনি টাকাগুলো নিয়ে দুবাইগামী বিমানে করে দেশের বাহিরে যাওয়া পরিকল্পনা করছিলেন। পরে রাজ্জাকের বোন, স্ত্রী, এনজিওর সভাপতি, ম্যানেজার ও ক্যাশিয়ারকে নওগাঁ জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আটক করা হয়।র্যাবের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, তথ্যমতে-আব্দুর রাজ্জাক, শিল্পি বেগম, সুমি আক্তার, এনজিও'র সভাপতি পিয়ার আলী, ম্যানেজার আতোয়ার রহমান আতা এবং ক্যাশিয়ার রিপন হোসেন এলাকার জনসাধারণের কাছ থেকে ১ লাখ টাকায় ২ হাজার টাকা লাভ দেয়ার কথা বলে ওই এনজিও'তে ৩০০ জনের বেশি গ্রাহককে স য় রাখার ব্যাপারে উৎসাহিত করেছিলেন।
আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আব্দুর রাজ্জাক স্বীকার করেন টাকা নিয়ে দুবাই পালিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। গ্রেফতার হওয়া আসামীদের আইনগত ব্যবস্থা নিতে নওগাঁ সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। এরআগে এঘটনায় ভোক্তভোগিরা থানায় মামলা করেছিলেন।
এ ব্যাপারে নওগাঁ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল হক বলেন গ্রেপ্তারকৃতদের ওইদিন বিকেলেই আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!