জাতীয় পার্টির প্রতিবাদ কর্মসূচিকে ঘিরে সংঘর্ষ, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, এমনকি দলীয় কার্যালয়ে হামলা ও আগুন দেওয়ার ঘটনা দেশের রাজনীতিতে সহিংসতার নতুন উদাহরণ হয়ে উঠেছে। এই অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি দেশের রাজনীতিতে সহনশীলতার অভাবকেই নির্দেশ করছে।
বৃহস্পতিবার জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে হামলার ঘটনায় দুই পক্ষের মধ্যে চলছে অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ। জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, শুক্রবারের কর্মসূচির প্রস্তুতি নিতে তাদের নেতা-কর্মীরা কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন। তখন একদল লোক হঠাৎ মিছিল নিয়ে এসে তাদের ওপর হামলা চালায়, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ ঘটায়। অন্যদিকে, 'ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র, শ্রমিক, জনতা'র পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে যে, তাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে জাতীয় পার্টির কার্যালয় থেকে আক্রমণ চালানো হয়।
পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয় গতকাল শনিবার জাতীয় পার্টির সমাবেশকে ঘিরে। সেই সমাবেশ প্রতিহত করার ঘোষণা দেয় 'ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র, শ্রমিক, জনতা'। এই উত্তেজনা থেকে জননিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছিল। পরে ঢাকার কাকরাইলসহ আশপাশের এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। এর ফলে দুই পক্ষই তাদের কর্মসূচি স্থগিত করে, যা রাজনৈতিক সহনশীলতার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের সাংবাদিকদের বলেন, তাদের দল ফ্যাসিবাদের দোসর নয় বরং অতীতে তারা নিজেরাও নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। তিনি ঘোষণা দেন যে, যেকোনো মূল্যে তারা তাদের কর্মসূচি পালন করবেন। এদিকে, 'ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র, শ্রমিক, জনতা' একই স্থানে তাদের কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিলে সংঘাতের আশঙ্কা আরও বেড়ে যায়।
উল্লেখ্য, গত জুলাই-আগস্ট মাসে কোটা সংস্কার আন্দোলনের মাধ্যমে ছাত্র-জনতার একটি অংশ সহিংসতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল। এই অভ্যুত্থান অনেকের কাছে রাজনৈতিক সহিংসতার অবসান ঘটাবে বলে প্রত্যাশা তৈরি করেছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক সহিংসতার ঘটনাগুলো সেই আশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, গণতান্ত্রিক সমাজে যেকোনো দলের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনের অধিকার থাকা উচিত। কর্মসূচি প্রতিহত করা বা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা উস্কানিমূলক এবং অগণতান্ত্রিক মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!