logo

যোগাযোগের ঠিকানাঃ

House-1, Road-2, Metro Housing Ltd, (Beside RAB-2 Headquarter), Mohammadpur, Dhaka-1207

নিউজ রুম

+8801711701332, +8801766004470

মার্কেটিং এন্ড সেলস

+8801877756675

logo

BDCN24 হল সংবাদ, মতামত এবং বিনোদনের জন্য একটি বাংলাদেশ ভিত্তিক মাল্টিমিডিয়া প্ল্যাটফর্ম। এটি পাঠক এবং শ্রোতাদের রাখার জন্য একটি ২৪/৭/৩৬৫ এর প্ল্যাটফর্ম

যোগাযোগের ঠিকানাঃ

House-1, Road-2, Metro Housing Ltd, (Beside RAB-2 Headquarter), Mohammadpur, Dhaka-1207

নিউজ রুম

+8801711701332, +8801766004470

মার্কেটিং এন্ড সেলস

+8801877756675

হোম - খোলামত- মুজিব দর্শন ও দেশপ্রেম- অধ্যাপক ড. মো. নাছিম আখতার

মুজিব দর্শন ও দেশপ্রেম- অধ্যাপক ড. মো. নাছিম আখতার

মুজিব দর্শন ও দেশপ্রেম- অধ্যাপক ড. মো. নাছিম আখতার

‘জীবন অত্যন্ত ক্ষণস্থায়ী। এই কথা মনে রাখতে হবে। আমি বা আপনারা সবাই মৃত্যুর পর সামান্য কয়েক গজ কাপড় ছাড়া সঙ্গে আর কিছুই নিয়ে যাব না। তবে কেন আপনারা মানুষকে শোষণ করবেন, মানুষের ওপর অত্যাচার করবেন?’ জীবন সম্পর্কে নিজের এমন ভাবনা ব্যক্ত করে বড় প্রশ্ন রেখেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সাধারণ মানুষকে নিয়ে তাঁর ভাবনার গভীরতা এই উক্তিটির মধ্যেই অন্তর্নিহিত রয়েছে। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক চেতনাতেই ছিল মানব কল্যাণ। মানব কল্যাণে নিজেকে বিলিয়ে দিতে বড় শক্তি হিসেবে কাজ করে দেশপ্রেম। প্রকৃত দেশপ্রেম থাকলেই কেবল দেশ ও জাতির কল্যাণে নিজেকে উজাড় করে দেওয়া সম্ভব।


বঙ্গবন্ধু তার পঁঞ্চান্ন বছর জীবনের বারো বছরের অধিক সময় জেলে কাটিয়েছেন, আঠারোবার কারারুদ্ধ হয়েছেন, চব্বিশটি মামলায় আসামীর কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েছেন, দু’বার মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছেন। এত ত্যাগ, এত তিতীক্ষা শুধু সম্ভব হয়েছে দেশের প্রতি তার প্রগাঢ় ভালোবাসার কারণে। মানুষের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে সব ধরনের জুলুম, অত্যাচার, নির্যাতন বরণ করে নিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। তিনি আমাদেরকে প্রগতিবাদী অসাম্প্রদায়িক সমাজ বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু বলেছেন ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ না থাকলে আমাদের স্বাধীনতার অস্তিত্ব বিপন্ন হবে।’ তিনি স্বাধীনতার অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখতে দেশপ্রেমের উপর জোর দিয়েছেন। নিজের মাটির প্রতি মমতার টান না থাকলে, আজ না হয় কাল অস্তিত্বে আঘাত আসবেই; এমন বার্তা বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের কণ্ঠে বারংবার উচ্চারিত হয়েছে। ১৯৭২ সালে ১০ জানুয়ারি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, “আমি আজ বাংলার মানুষকে দেখলাম, বাংলার মাটিকে দেখলাম, বাংলার আকাশকে দেখলাম, বাংলার আবহাওয়াকে অনুভব করলাম। বাংলাকে আমি ছালাম জানাই। আমার সোনার বাংলা তোমায় আমি বড় ভালোবাসি”। দেশের মাটি, আকাশ ও আবহাওয়াকে অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে অনুভব করার জন্য দেশপ্রেমসিক্ত একটি হৃদয় থাকতে হয়। স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের বক্তব্যে ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি’ তে ‘বড়’ শব্দটি যোগ করার মধ্যে প্রকাশ পায় বঙ্গবন্ধুর নিগূঢ় দেশপ্রেম। 


দেশপ্রেমের সঙ্গে দায়িত্ববোধ ও আস্থার মেলবন্ধন হলেই মেলে পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে সফলতা। জাতির পিতা বলতেন, ‘যিনি যেখানে রয়েছেন, তিনি সেখানে আপন কর্তব্য পালন করলে দেশের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে না।’ এই উক্তির মাধ্যমে স্বীয় দায়িত্বের প্রতি সবাইকে সর্বদা সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। যে যেখানে রয়েছে প্রত্যেককে সঠিকভাবে নিজের কাজ করে যেতে হবে। দায়িত্ব পালনে অবহেলায় তৈরি হতে পারে বিশৃঙ্খলা। সমাজে শান্তির নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে দায়িত্বশীলদের নিজ কাজ সঠিকভাবে পালনের বিকল্প নেই। বিচ্যুতি ঘটলেই অবহেলিত হবে জনগণ ও উপেক্ষিত হবে যোগ্যতা। সাধারণ মানুষ তার অধিকার হারাবে। মনে রাখতে হবে, মানুষের অধিকার রক্ষার নিরন্তর চেষ্টার মধ্যেই রয়েছে প্রশান্তি। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন ‘সাত কোটি বাঙালির ভালোবাসার কাঙ্গাল আমি। আমি সব হারাতে পারি, কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসা হারাতে পারব না।’ ভালোবাসা হারাতে না চাওয়ার মধ্য দিয়ে তিনি মেহনতি মানুষের জন্য উদয়াস্ত কাজ করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন। দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে নিজের সবটুকু বিলিয়ে দিয়ে সাধারণ মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করেছেন তিনি এবং অন্যদেরকেও নিজ দায়িত্বে কাজ করে যেতে আহ্বান জানিয়েছেন।

আরও পড়ুন

ববিতে শেখ রাসেল জাতীয় শিশু -কিশোর পরিষদ কতৃক উদযাপিত হলো জাতির পিতার জন্মদিন ও আলোচনা সভা

ববিতে শেখ রাসেল জাতীয় শিশু -কিশোর পরিষদ কতৃক উদযাপিত হলো জাতির পিতার জন্মদিন ও আলোচনা সভা

বঙ্গবন্ধুর ভাবনায় ছিল অন্যায়-অবিচার শুন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা। তিনি বলতেন, ‘দেশ থেকে সর্বপ্রকার অন্যায়-অবিচার ও শোষণ উচ্ছেদ করার জন্য দরকার হলে আমি আমার জীবন উৎসর্গ করব।’ দেশের মানুষের কল্যাণে শুধু নিজ দায়িত্ব পালন করলেই অন্যায়- অবিচার ও শোষণ বন্ধ করা সম্ভব। মুজিব দর্শন আমাদের এটাই শেখায়। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘অযোগ্য নেতৃত্ব, নীতিহীন নেতা ও কাপুরুষ রাজনীতিবিদদের সঙ্গে কোনো দিন একসঙ্গে হয়ে দেশের কাজে নামতে নেই। তাতে দেশসেবার চেয়ে দেশের ও জনগণের সর্বনাশই বেশি হয়।’ তিনি এখানে সুস্পষ্টভাবে আদর্শ ও যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে তোলার ইঙ্গিত দিয়ে গেছেন। যোগ্য নেতৃত্বের হাতেই কেবল দেশ নিরাপদ ও উন্নত হয়। যোগ্য নেতৃত্ব নিজের বিষয়ে থাকেন উদাসীন। তাঁর ধ্যান, জ্ঞান, ধারণায় ছিল দেশের মানুষের মঙ্গলাকাঙ্খা। তাই তো বঙ্গবন্ধুর বক্তব্যে প্রতিধ্বনিত হয়েছিল, ‘এ স্বাধীনতা আমার ব্যর্থ হয়ে যাবে- যদি আমার বাংলার মানুষ পেট ভরে ভাত না খায়। এই স্বাধীনতা আমার পূর্ণ হবে না- যদি বাংলার মা-বোনেরা কাপড় না পায়। এ স্বাধীনতা আমার পূর্ণ হবে না- যদি এদেশের মানুষ যারা আমার যুবক শ্রেণি আছে তারা চাকরি না পায় বা কাজ না পায়।’


দেশের মাটি ও মানুষের প্রতি বঙ্গবন্ধুর আস্থা গভীরভাবে প্রকাশ পায় লন্ডনে ব্রিটিশ সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে। ১৯৭২ সালে পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তির পর বঙ্গবন্ধুকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, আপনার বাংলাদেশ তো এখন ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। সেখানে কিছুই নেই, শুধু ধ্বংসস্তুপ। উত্তরে তিনি বলেছিলেন, ‘আমার মাটি আছে। আমার মানুষ আছে। আমার মাটি যদি থাকে, আমার মানুষ যদি থাকে, একদিন এই ধ্বংসস্তুপ থেকেই আমি আমার বাংলাদেশকে ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত, শস্যশ্যামলা সোনার বাংলায় পরিণত করবো।’

⁠⁠⁠⁠⁠⁠⁠
দেশ, দেশের মাটি এবং মানুষের প্রতি বঙ্গবন্ধুর আস্থার এই বাস্তবায়ন পঁচাত্তরের নির্মমতার কারণে কিছুটা থমকে গিয়েছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করতে পারলেও ঘাতকরা তার আদর্শকে হত্যা করতে পারেননি। তার জ্যেষ্ঠ কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশ ও দেশের মাটির প্রতি একইভাবে আস্থা রেখে কাজ করে যাচ্ছেন মানুষের কল্যাণে। ফলশ্রুতিতে ব্রিটিশ সাংবাদিকদের বর্ণনায় উঠে আসা যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল। হেনরি কিসিঞ্জারের তলাবিহীন ঝুড়ি হিসেবে খ্যাত বাংলাদেশ আজকে  বিশ্ব দরবারে স্বমহিমায় আলোকজ্জ্বল একটি নক্ষত্র।
মুজিব দর্শন দেশপ্রেমের সঙ্গে দায়িত্ববোধ ও আস্থার মেলবন্ধন। বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়েও সেসব কথা বড় বেশি প্রাসঙ্গিক। দায়িত্ববোধেই মেলে মানুষের ভালোবাসা। দায়িত্ববোধেই প্রকাশ পায় দেশপ্রেমের পরাকাষ্ঠা। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, 'আমার সবচেয়ে বড় শক্তি আমার দেশের মানুষকে ভালোবাসি, সবচেয়ে বড় দুর্বলতা আমি তাদেরকে খুব বেশি ভালোবাসি'। মানুষের প্রতি ভালোবাসা থাকলেই দেশপ্রেম জন্মায়। আর দায়িত্ববোধ ও আস্থার মধ্য দিয়ে সেই দেশপ্রেম পরিপূর্ণতা পায়। 

মন্তব্য করুন ( 0 )

মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!

আরও খবর দেখুন

মুজিব দর্শন ও দেশপ্রেম- অধ্যাপক ড. মো. নাছিম আখতার

বিডিসিএন ২৪, নিজস্ব প্রতিনিধি

image

‘জীবন অত্যন্ত ক্ষণস্থায়ী। এই কথা মনে রাখতে হবে। আমি বা আপনারা সবাই মৃত্যুর পর সামান্য কয়েক গজ কাপড় ছাড়া সঙ্গে আর কিছুই নিয়ে যাব না। তবে কেন আপনারা মানুষকে শোষণ করবেন, মানুষের ওপর অত্যাচার করবেন?’ জীবন সম্পর্কে নিজের এমন ভাবনা ব্যক্ত করে বড় প্রশ্ন রেখেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর

রহমান। সাধারণ মানুষকে নিয়ে তাঁর ভাবনার গভীরতা এই উক্তিটির মধ্যেই অন্তর্নিহিত রয়েছে। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক চেতনাতেই ছিল মানব কল্যাণ। মানব কল্যাণে নিজেকে বিলিয়ে দিতে বড় শক্তি হিসেবে কাজ করে দেশপ্রেম। প্রকৃত দেশপ্রেম থাকলেই কেবল দেশ ও জাতির কল্যাণে নিজেকে উজাড় করে দেওয়া সম্ভব।


বঙ্গবন্ধু তার পঁঞ্চান্ন বছর জীবনের বারো বছরের অধিক সময় জেলে কাটিয়েছেন, আঠারোবার কারারুদ্ধ হয়েছেন, চব্বিশটি মামলায় আসামীর কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েছেন, দু’বার মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছেন। এত ত্যাগ, এত তিতীক্ষা শুধু সম্ভব হয়েছে দেশের প্রতি তার প্রগাঢ় ভালোবাসার কারণে। মানুষের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে সব ধরনের জুলুম, অত্যাচার, নির্যাতন বরণ করে নিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। তিনি আমাদেরকে প্রগতিবাদী অসাম্প্রদায়িক সমাজ বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু বলেছেন