২০২৩ সালে বিশ্বব্যাপী ক্লাবগুলো দলবদলে খরচের রেকর্ড গড়েছে। ফিফার গ্লোবাল ট্রান্সফার রিপোর্টে বলা হয়েছে, গত বছর ক্লাবগুলো মোট ৯৬৩ কোটি ডলার খরচ করেছে। যা ২০২২ সালের তুলনায় ৪৮ দশমিক ১ শতাংশ বেশি।
খরচে শীর্ষে থাকা পাঁচ লিগের মধ্যে এই প্রথমবারের মতো জায়গা করে নিয়েছে সৌদি আরবের ক্লাবগুলো। ২০২৩ সালে তাদের মোট খরচ ৯৭ কোটি ডলার, যেটা ২০২২ সালে ছিল ৫ কোটি ৪ লাখ ডলার।
গত বছর সবচেয়ে বেশি খরচ করেছে ইংল্যান্ডের ক্লাবগুলো। তাদের মোট খরচ ২৯৬ কোটি ডলার। চেলসি এই খরচের নেতৃত্বে।
চারটি অ্যাসোসিয়েশন দেশ দলবদলে ১০০ কোটি ডলারের বেশি ফি পেয়েছে। জার্মানির ক্লাবগুলো ১২১ কোটি ডলার নিয়ে দলবদল ফি পাওয়ার তালিকায় শীর্ষে। ফ্রান্স (১১৯ কোটি ডলার), ইংল্যান্ড (১০৪ কোটি ডলার) ও ইতালি (১০২ কোটি ডলার) এর পরের অবস্থানে।
২০২৩ সালে দলবদলে সবচেয়ে বেশি খরচে চেলসির পর ফ্রান্সের ক্লাব পিএসজি। শীর্ষ পাঁচে থাকা বাকি তিন ক্লাব যথাক্রমে লিভারপুল, রিয়াল মাদ্রিদ ও বায়ার্ন মিউনিখ। ছয়ে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও সাতে ম্যানচেস্টার সিটি।
লাতিন আমেরিকান ক্লাবগুলোর মধ্যে খরচে শীর্ষে ফ্লামেঙ্গো। কনকাক্যাফ অঞ্চল থেকে খরচের শীর্ষস্থানটি লিওনেল মেসির ক্লাব ইন্টার মায়ামির। এএফসি থেকে নেইমারের ক্লাব আল হিলাল খরচে শীর্ষে এবং আফ্রিকা থেকে শীর্ষস্থানটি মিসরের ক্লাব আল আহলির।
খেলোয়াড় কেনাবেচায় খরচ বেড়ে যাওয়ার বেশ কিছু কারণ রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে:
কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে গত দুই বছর অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিয়েছিল। কিন্তু পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার সাথে সাথে ক্লাবগুলোর আর্থিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। ফলে তারা খেলোয়াড় কেনার জন্য বেশি অর্থ খরচ করতে পারছে।
ইউরোপীয় ফুটবলের বিভিন্ন লিগ, যেমন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ, স্প্যানিশ লা লিগা, ইতালিয়ান সিরি আ ও জার্মান বুন্দেসলিগা, বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও অর্থনৈতিকভাবে সফল লিগ। এই লিগগুলোতে খেলার জন্য খেলোয়াড়রা বেশি অর্থ চায়।
খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্সের মূল্য দিন দিন বেড়ে চলেছে। ফলে প্রতিভাবান ও দক্ষ খেলোয়াড়দের কেনার জন্য ক্লাবগুলোকে বেশি অর্থ খরচ করতে হচ্ছে।
খেলোয়াড় কেনাবেচায় খরচ বেড়ে যাওয়ার ফলে ফুটবলের বাজারে বৈষম্য আরও বেড়েছে। ধনী ক্লাবগুলো আরও বেশি অর্থ খরচ করে সেরা খেলোয়াড়দের দলে টানতে পারছে। ফলে দরিদ্র ক্লাবগুলো তাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হারিয়ে ফেলছে।
এছাড়াও, খেলোয়াড় কেনাবেচায় খরচ বেড়ে যাওয়া ফুটবলের সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রভাবকেও প্রভাবিত করছে। ফুটবলের সাথে জড়িত বিভিন্ন ব্যবসায়ের আয় বেড়ে যাচ্ছে। কিন্তু খেলোয়াড়দের বেতন ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাও বাড়ছে। ফলে ফুটবলের অর্থনৈতিক খরচও বেড়ে যাচ্ছে।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!