ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের সমর্থনে জাতিসংঘে জড়ো হয়েছেন বিশ্বের বহু নেতা। গাজা যুদ্ধের প্রায় দুই বছর পর এই উদ্যোগকে বলা হচ্ছে এক গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক পরিবর্তন, যদিও যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল তা বর্জন করেছে।
সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের পক্ষে সমর্থন জানাতে একত্রিত হন কয়েক ডজন বিশ্বনেতা। রয়টার্সের খবরে বলা হয়, গাজা যুদ্ধ শুরুর প্রায় দুই বছর পর এটি একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ, যা ইসরাইল ও তার ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের তীব্র আপত্তির মুখে পড়েছে।
এই বৈঠকের মধ্যেই ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয় ফ্রান্স। সৌদি আরবের সঙ্গে আলোচনার পর ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ জানান, শান্তির পথ তৈরি করতে ফ্রান্স এগিয়ে আসবে। তিনি বলেন, ইসরাইল ও ফিলিস্তিনকে নিরাপত্তার মধ্যে পাশাপাশি বসবাসের সুযোগ তৈরি করাই এখন জরুরি।
ম্যাক্রোঁ আরও জানান, একটি নবায়নকৃত ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের জন্য কাঠামো প্রণয়ন করা হবে। এর আওতায় ফ্রান্স সংস্কার, যুদ্ধবিরতি এবং হামাসের হাতে থাকা জিম্মিদের মুক্তির মতো বিষয়ে কাজ করবে।
সমাবেশে বক্তব্য দেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেব এরদোগান, কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি এবং জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ বলেন, ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতির সাম্প্রতিক পদক্ষেপগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এছাড়া লুক্সেমবার্গ, মাল্টা, বেলজিয়াম ও মোনাকো নতুন করে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে। এখন পর্যন্ত জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর তিন-চতুর্থাংশেরও বেশি দেশ এই স্বীকৃতি দিয়েছে।
অন্যদিকে, ইসরাইলের বর্তমান ডানপন্থি সরকার বলেছে, কোনো ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র কখনো প্রতিষ্ঠিত হবে না। তাদের দাবি, এ ধরনের উদ্যোগ শান্তি প্রক্রিয়াকে দুর্বল করবে।
রয়টার্স জানায়, গাজায় সামরিক অভিযানের কারণে ইসরাইল আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে পড়েছে। স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের হিসাব অনুযায়ী, সেখানে প্রাণ হারিয়েছেন ৬৫ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। ইতোমধ্যে ইসরাইল গাজা সিটিতে স্থল আক্রমণ চালাচ্ছে, যেখানে যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা ক্ষীণ।
তবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল সোমবারের এই বৈঠক বর্জন করে। জাতিসংঘে ইসরাইলি রাষ্ট্রদূত ড্যানি ড্যানন জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু দেশে ফেরার পর স্বীকৃতির ঘোষণার বিষয়ে পরবর্তী অবস্থান নির্ধারণ করা হবে।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!