জুলাই-আগস্টের গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া সাবেক ৯ মন্ত্রীসহ ১৩ জনকে সোমবার (১৮ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা ৪৬ জনের মধ্যে এটি প্রথমবার মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে তাদের ট্রাইব্যুনালে তোলা হলো।
সকাল ১০টায় কড়া নিরাপত্তার মধ্যে প্রিজন ভ্যানে করে আসামিদের ট্রাইব্যুনালে আনা হয়। পরে তাদের আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। আসামিদের মধ্যে রয়েছেন—সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, ফারুক খান, ডা. দীপু মনি, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, তৌফিক-ই-ইলাহী, শাজাহান খান, কামাল আহমেদ মজুমদার, গোলাম দস্তগীর গাজী, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক এবং সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব জাহাঙ্গীর আলম।
গ্রেপ্তার হওয়া সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক আদালত থেকে বের হওয়ার সময় হাতজোড় করে দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন। অন্য একটি মামলায় রিমান্ডে থাকায় আব্দুর রাজ্জাককে এদিন হাজির করা হয়নি।
- জুলাই-আগস্টের গণহত্যার অভিযোগ
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত জুলাই-আগস্ট মাসে সংঘটিত গণহত্যার অভিযোগের ভিত্তিতে এ মামলাগুলো করা হয়। অন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্তে এসব অভিযোগের বিচার করতে নতুন প্রসিকিউশন টিম ও তদন্ত সংস্থা গঠন করা হয়েছে।
এর আগে, গত ২৭ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই মামলায় গ্রেপ্তারকৃত ২০ জনকে হাজির করার নির্দেশ দেয়। এর মধ্যে ১৪ জনকে ১৮ নভেম্বর এবং বাকি পুলিশ ও সেনা কর্মকর্তাদের ২০ নভেম্বর হাজির করতে বলা হয়।
- ট্রাইব্যুনালের পটভূমি
স্বাধীনতার ৩৯ বছর পর ২০১০ সালে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। তবে ২০১৫ সালের পর থেকে এর কার্যক্রম গতি হারালেও হাসিনা সরকারের পতনের পর এটি আবার সক্রিয় হয়।
এদিকে, শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ, ১৪ দলের নেতা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গুম, হত্যা ও গণহত্যার অভিযোগে একশোর বেশি মামলা ট্রাইব্যুনালে জমা পড়েছে। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!