রাজনৈতিক কমিটির মূল দলে ৩৩% নারী অন্তর্ভুক্তি বাস্তবায়নের দাবিতে বরগুনার জেলা আওয়ামী মহিলা লীগ ও জেলা জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের নেতৃবৃন্দ সংবাদ সম্মেলন করেন।
শনিবার (২২ জুন) বরগুনা জেলা মাল্টিপার্টি অ্যাডভোকেসি ফোরামের নারীর ক্ষমতায়ন উপকমিটি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন বিকেল চারটায় বরগুনা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে রাজনৈতিক কমিটির মূলদলে ৩৩% নারী অন্তর্ভুক্তি বাস্তবায়ন দাবিনামা উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দল বরগুনা জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রঞ্জুয়ারা শিপু ও পৌর মহিলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি কাশপিয়া দেবনাথ।
সংবাদ সম্মেলনে নারী নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক নিগাত সুলতানা আজাদ, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হোসনেয়ারা চম্পা, সহ-সভাপতি খালেদা ইসলাম সুইটি, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সদস্য আরতি রায়, পৌর মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিথি হাওলাদার পূজা, পৌর কমিটির নেত্রী দিপু রানী এবং জেলা জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক সালমা খানম পুতুল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিনা মল্লিক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রুপা খান, পাথরঘাটা মহিলা দলের সভানেত্রী রুমা আক্তার, জেলা মহিলা দলের সদস্য তানিয়া আক্তার, ছাত্রদল নেত্রী তাসলিমা আক্তার প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনের নারী নেতৃবৃন্দ বলেন, এমএএফ নারীর ক্ষমতায়ন উপ-কমিটি নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে প্রতিটি রাজনৈতিক কমিটির মূলদলে ৩৩% নারী অন্তর্ভুক্তির জন্য এডভোকেসি করে আসছো। তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বরগুনা'র নারী নেতাদের পক্ষে নারীর ক্ষমতায়ন উপ-কমিটি তাদের নিজ নিজ দলীয় সিনিয়র নেতাদের কাছে নিজ নিজ দলের নেতা-কর্মীদের সমর্থন সম্বলিত গণস্বাক্ষরসহ আবেদনপত্র জমা দেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত মাল্টিপার্টি অ্যাডভোকেসি ফোরাম (এমএএফ)-এর একটি উপ-কমিটি হল নারীর ক্ষমতায়ন উপ-কমিটি। ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল-এর এসপিএল প্রকল্পের আওতায় এবং ইউএসএআইডি-এর অর্থায়নে এমএএফ নারীর ক্ষমতায়ন উপ-কমিটি নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে কিছু কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করে। সেই কর্মপরিকল্পনার একটি অন্যতম পরিকল্পনা হল রাজনৈতিক কমিটির মূলদলে ৩৩% নারী অন্তর্ভুক্তি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এডভোকেসি করা।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ২০০৯ (আরপিও)-এর ৯০ এর বি ধারা অনুযায়ী, ২০২০ সালের মধ্যেই সকল পর্যায়ের মূলদলের কমিটিগুলোতে ৩৩% নারী অন্তভুক্তি বাধ্যতামূলক ছিল। যদিও তা দলগুলো এখন পর্যন্ত পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে পারেনি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ-এর ২০১৯ সালের সংশোধিত গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ-এর প্রতিটি ইউনিট কমিটিতে অন্তত ৩৩% নারী অন্তর্ভুক্তির নির্দেশনা রয়েছে। অন্যদিকে, ২০২১ সালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ৩৩% নারী অন্তর্ভুক্তির লক্ষ্যে সকল বিদ্যমান জেলা ও মহানগর কমিটিতে আরো ১৫ শতাংশ নারী অন্তর্ভুক্তির নির্দেশনামূলক মহাসচিব স্বাক্ষরিত একটি চিঠি কেন্দ্র থেকে পাঠানো হয়।
বর্তমানে বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগ এবং বরগুনা জেলা জাতীয়তাবাদী দল কোনটারই পূর্ণাঙ্গ কমিটি নেই। বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগ এর ৩ সদস্য বিশিষ্ট আংশিক কমিটি এবং বরগুনা জেলা জাতীয়তাবাদী দল এর বর্তমানে কোন কমিটি নেই। এই অবস্থায় সামনের পূর্ণাঙ্গ মূলদল কমিটিতে ৩৩% নারী অন্তর্ভুক্তির সুযোগ রয়েছে। তাই এই সময়টাকে নারীর ক্ষমতায়ন উপকমিটি নারী অন্তর্ভুক্তির এডভোকেসির জন্য আদর্শ সময় মনে করেছে।
এজন্য এমএএফ বরগুনা ও ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের সহায়তায় নারীর ক্ষমতায়ন উপকমিটির নারী নেতৃবৃন্দ আলাদা আলাদা দুইটি পিটিশন প্রস্তুত করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-এর জন্য। পিটিশনে নিজ নিজ দলের নেতা কর্মীদের গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করে উপ-কমিটির নারী নেতৃরা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর পিটিশন বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির নিকট হস্তান্তর করেন নারীর ক্ষমতায়ন উপ কমিটির আওয়ামী লীগের নারী নেতৃবৃন্দ। অপরদিকে বরগুনা জেলা জাতীয়তাবাদী দল এব কোন কমিটি না থাকায় বরিশাল বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট বিলকিস জাহান শিরিনের কাছে পিটিশন জমা দেয় নারীর ক্ষমতায়ন উপকমিটির বিএনপি নারী নেতৃবৃন্দ।
উভয় দল থেকে পর্যাপ্ত নারী অন্তর্ভুক্তির আশ্বাস দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ-এর বিগত বরগুনা জেলা কমিটিতে ১১ শতাংশ নারী অন্তর্ভুক্ত ছিল এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-এর বিগত বরগুনা জেলা আহ্বায়ক কমিটিতেও ১০ শতাংশ নারী অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। এখন পরবর্তী কমিটিগুলোতে ৩৩% নারী অন্তর্ভুক্ত করার আমরা জোর দাবি জানাচ্ছি।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!