মানুষ সৃষ্টির প্রধান উদ্দেশ্য হলো মহান আল্লাহর ইবাদত করা। তিনি বান্দার আমল পছন্দ করেন এবং চান, বান্দা যেন একমাত্র তাঁর সন্তুষ্টির জন্য আমল করে। বিশেষ করে রাতের আমল আল্লাহর কাছে অত্যন্ত প্রিয়। রাতের সময়টিকে ইবাদতের জন্য সর্বোত্তম সময় হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।
নবিজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতের বিভিন্ন আমলের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন এবং তাঁর উম্মতকে এসব আমল করার তাগিদ দিয়েছেন। এখানে রাতের তিনটি বিশেষ আমল তুলে ধরা হলো, যা আমাদের জন্য কল্যাণ ও নিরাপত্তার বার্তা বয়ে আনে।
১. সুরা মুলক তেলাওয়াত করা
নবী করিম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি নিয়মিত সুরা মুলক তেলাওয়াত করবে, সে কবরের আজাব থেকে মুক্তি পাবে।’ (তিরমিজি)
এটি রাতের বেলা পড়া উত্তম হলেও দিনের যেকোনো সময়ও পড়া যায়। আরেক হাদিসে এসেছে, নবীজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সুরা মুলক তেলাওয়াত না করে ঘুমাতে যেতেন না। (তিরমিজি)
২. সুরা ইখলাস, ফালাক ও নাস পড়া
নিরাপত্তার জন্য এই তিনটি সুরা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নবীজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সকাল-বিকাল সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক ও সুরা নাস তিনবার করে পড়বে, এগুলোই তার সবকিছুর (নিরাপত্তার) জন্য যথেষ্ট হবে।’
হজরত আয়েশা (রাদিয়াল্লাহু আনহা) বর্ণনা করেন, ‘নবীজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রতি রাতে ঘুমানোর আগে উভয় হাত একত্র করে এই তিনটি সুরা পড়তেন এবং হাতের মধ্যে ফুঁক দিয়ে শরীরের বিভিন্ন অংশে হাত বুলাতেন। তিনি এটি তিনবার করতেন।’ (বুখারি)
৩. তিন তাসবিহ পড়া
নবীজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রতিটি ফরজ নামাজের পর তিনটি বিশেষ তাসবিহ পাঠ করার নির্দেশ দিয়েছেন:
✅ সুবহানাল্লাহ – ৩৩ বার
✅ আলহামদুলিল্লাহ – ৩৩ বার
✅ আল্লাহু আকবার – ৩৪ বার
এগুলো ফরজ নামাজের পর পড়া উত্তম, তবে সকাল-বিকেল ও রাতের বেলায় শোয়ার সময়ও পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন নবীজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)।
আমাদের করণীয়
আমরা যদি প্রতিদিন এই তিনটি আমল পালন করি, তবে আল্লাহর রহমত লাভ করা সহজ হবে এবং আমাদের জীবন শান্তিময় ও নিরাপদ থাকবে। আসুন, রাতের এই বিশেষ আমলগুলো নিয়মিতভাবে করার অভ্যাস গড়ে তুলি এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করি।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!