ইসলামে নামাজের গুরুত্ব অপরিসীম। এটি ইসলামের পাঁচটি ভিত্তির একটি এবং প্রতিটি মুসলমানের জন্য প্রতিদিন পাঁচবার নামাজ আদায় বাধ্যতামূলক। নির্ধারিত সময় অনুযায়ী নামাজ আদায় করাই নিয়ম। তবে এমন তিনটি বিশেষ সময় আছে, যখন কোনো নামাজ পড়া নিষিদ্ধ। এই নিষেধাজ্ঞা সুন্নাহ দ্বারা প্রমাণিত এবং মুসলমানদের জন্য তা মান্য করা অত্যাবশ্যক।
কোন তিন সময়ে নামাজ নিষিদ্ধ?
হজরত উকবা বিন আমের (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, তিন সময়ে নামাজ পড়া এবং মৃতকে দাফন করতে নিষেধ করা হয়েছে:
সূর্যোদয়ের সময় থেকে কিছুটা উপরে ওঠা পর্যন্ত:
এ সময়ে সূর্য উদয়ের শুরু থেকে তার হলুদ আভা পুরোপুরি দূর না হওয়া পর্যন্ত নামাজ নিষিদ্ধ। ফকিহদের মতে, সূর্য ওঠার পর সাধারণত ২০ মিনিট সময় লাগে এই সময় শেষ হতে। যেমন, যদি সূর্য ওঠার সময় সকাল ৬টা হয়, তাহলে ৬টা ২০ পর্যন্ত নামাজ পড়া উচিত নয়।
সূর্য মধ্যাকাশে অবস্থানের সময়:
সূর্য যখন ঠিক মাথার ওপরে থাকে, তখন নামাজ এবং সেজদা করা নিষেধ। এই সময়টিকে আরবি ভাষায় জাওয়াল বলা হয়। তবে সূর্য পশ্চিমাকাশে ঢলে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে জোহরের নামাজের সময় শুরু হয় এবং তখন নামাজ পড়া জায়েজ হয়ে যায়।
সূর্যাস্তের ঠিক আগে:
সূর্য যখন ডুবে যেতে শুরু করে এবং হলুদ রং ধারণ করে, তখন থেকে সূর্য পুরোপুরি অস্ত যাওয়ার আগ পর্যন্ত নামাজ নিষিদ্ধ। এই সময় জানাজার নামাজ ও দাফন করাও নিষেধ, তবে প্রয়োজনে জানাজা দ্রুত পড়িয়ে দাফন করা যায়।
কেন এই সময়ে নামাজ নিষিদ্ধ?
মুসলিম শরিফের বর্ণনা অনুযায়ী, এই সময়গুলোতে সাধারণত কাফেররা সূর্য পূজা করত। মুসলমানরা যেন এই সময় নামাজ আদায় করে তাদের মতো উপাসনার অনুকরণ না করে, সে কারণেই এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
আসর ও ফজরের পর নামাজ আদায় প্রসঙ্গে
মহানবী (সা.) বলেন, আসরের নামাজের পর সূর্য ডোবা পর্যন্ত আর কোনো নামাজ নেই, ফজরের নামাজের পর সূর্য ওঠা পর্যন্ত কোনো নামাজ নেই। (বুখারি: ১০৪১)। তবে কেউ যদি আসরের নামাজ ভুলে যান, তবে সূর্যাস্তের আগে আগে তা আদায় করা যায়। সূর্য ডোবার সঙ্গে সঙ্গেই আসরের সময় শেষ হয়ে যায়।
সতর্কতা ও করণীয়
সূর্য ওঠার বা ডোবার সময়ের ৫ মিনিট আগে ও পরে সতর্ক থাকা উচিত।
প্রয়োজনে সময়সূচি দেখার জন্য আবহাওয়ার অফিস বা ইসলামিক ক্যালেন্ডারের সাহায্য নিতে পারেন।
নামাজ একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত, তবে নির্ধারিত সময় ও নিয়ম মেনে তা আদায় করাই শ্রেয়। নিষিদ্ধ সময়ে নামাজ এড়িয়ে চলা প্রত্যেক মুসলমানের দায়িত্ব।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!