ইহুদি শব্দটি পবিত্র কোরআনে ৯ বার উল্লেখ করা হয়েছে। এ শব্দটি মূলত ইয়াহুদা থেকে এসেছে, যিনি ছিলেন হজরত ইয়াকুব (আ.)-এর জ্যেষ্ঠপুত্র এবং হজরত ইউসুফ (আ.)-এর ভাই। ইহুদিদের বংশধরদের ইহুদি বলা হয়, যারা আল্লাহর প্রেরিত নবী মুসা (আ.)-এর অনুসারী ছিল।
ইহুদি শব্দের উৎপত্তি এবং অর্থ
ইহুদি শব্দটি এসেছে 'ইয়াহুদা' থেকে, যিনি ছিলেন তাওবাকারী বা তাওবা করা ব্যক্তি। ইয়াহুদা তার গো-বৎসপূজা থেকে তাওবা করার কারণে এই নাম পেয়েছিলেন। একে একে, 'ইয়াহুদা' বা 'তাওবাকারী' শব্দটি পরবর্তীতে 'ইহুদি' হিসেবে পরিণত হয়। কোরআনে এ বিষয়ে বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে।
কোরআনে ইহুদিদের বর্ণনা
ইহুদিদের নামকরণের পেছনে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটে যখন হজরত মুসা (আ.) তার সম্প্রদায়কে আল্লাহর কাছে তওবা করতে বলেন। একবার মুসা (আ.) বনি ইসরাইলের সত্তরজন লোককে তুর পাহাড়ে নিয়ে যান। সেখানে ওই দলের লোকেরা আল্লাহকে সরাসরি দেখতে চেয়েছিল, কিন্তু আল্লাহ তাদের ওপর শাস্তি পাঠান এবং তারা মারা যায়। মুসা (আ.) এই ঘটনার পর আল্লাহর কাছে দোয়া করেন: "ইন্না হুদনা ইলাইক" অর্থাৎ আমরা তোমার কাছে প্রত্যাবর্তন করলাম বা তওবা করলাম।
কোরআনের আয়াত
এ বিষয়ে পবিত্র কোরআনে সুরা আরাফে আল্লাহ বলেছেন, "আর মুসা নিজের জাতি থেকে সত্তর জন লোককে আমার নির্ধারিত স্থানের জন্য নির্বাচন করল। তারপর যখন ভূমিকম্প তাদেরকে পাকড়াও করলো, তখন সে বললো, ‘হে আমার রব, আপনি চাইলে আগেও এদের ধ্বংস করতে পারতেন এবং আমাকেও।'” (সুরা আরাফ: ১৫৫, ১৫৬)
ইহুদিদের পারস্পরিক দ্বন্দ্ব
এছাড়াও, কোরআনে সুরা বাকারায় ইহুদিদের এবং খ্রিষ্টানদের মধ্যে পারস্পরিক দ্বন্দ্বের কথা বলা হয়েছে, যেখানে তারা একে অপরকে ভিত্তিহীন বলে সমালোচনা করে। আল্লাহ এখানে বলেন: "আর ইহুদিরা বলে, নাসারাদের কোন ভিত্তি নেই, আর নাসারারা বলে ইহুদিদের কোন ভিত্তি নেই।" (সুরা বাকারা: ১১৩)
নিষ্কর্ষ
ইহুদি শব্দের পেছনে রয়েছে এক ঐতিহাসিক এবং ধর্মীয় দিক, যা কোরআনে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে বর্ণিত হয়েছে। এই শব্দের ব্যবহারের মাধ্যমে মুসলিমরা ইহুদিদের ইতিহাস, তাদের তাওবা এবং আল্লাহর প্রতি তাদের আনুগত্যের দিকে ইঙ্গিত করে থাকে।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!