এইচ এম আরিফ হোসেন/
চাঁদপুর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের আয়োজনে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার রোধে হোমিওপ্যাথিক ডাক্তারদের করণীয় শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
২৬ মার্চ রবিবার সকাল ১০ টায় চাঁদপুর আর্দশ হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজে ও হাসপাতালে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার রোধে হোমিওপ্যাথিক ডাক্তারদের করণীয় শীর্ষক এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ মুস্তাফিজুর রহমান। প্রধান অতিথি সেমিনারের উদ্বোধন ও প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন । এই সময় তিনি বলেন মাদক এমন একটি দ্রব্য, যা খেলে নেশা হয়। গাঁজা, ফেনসিডিল, চরস, ভাং, গুল, জর্দা, হেরোইন, প্যাথেড্রিন, মদ, ইয়াবাসহ সবই মাদকের অন্তর্ভুক্ত। মাদক উৎপাদনকারী দেশ না হলেও বাংলাদেশ ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে মাদকের সর্বাত্মক আগ্রাসনের শিকারে পরিণত হয়েছে। মাদকের স্বর্গরাজ্য গোল্ডেন ক্রিসেন্ট আমাদের দেশের উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত এবং আন্তর্জাতিক মাদকদ্রব্য উৎপাদনকারী অঞ্চল মিয়ানমার, লাওস এবং থাইল্যান্ডের সমন্বয়ে গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গলের দক্ষিণ-পূর্ব কোনে অবস্থিত। এসব দেশ থেকে আন্তর্জাতিকভাবে মাদক পাচারের জন্য দেশের অভ্যন্তরীণ ট্রানজিট ব্যবহার করার কারণে মাদকের বিস্তার রোধ করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে।

অসংখ্য কারণে একজন মানুষ মাদকের প্রতি আসক্ত হতে পারে। মাদক সেবনের ফলে মানুষের মাঝে এক ধরনের ভালো লাগা তৈরি হয়। শক্তি, আত্মবিশ্বাস, সাহস বাড়িয়ে দিতে পারে কোকেনের মতো মাদক। হেরোইনের প্রভাবে প্রশান্তি আর তৃপ্তির অনুভূতি জন্মায়।
ডিপ্রেশন, মানসিক চাপ, বিষন্নতা ইত্যাদি কমাতেও মাদক সাময়িক সময়ের জন্য কাজে দেয়। মাদকাসক্তের বড় অংশ মানসিক চাপে পড়ে মাদক গ্রহণ শুরু করে। আর এভাবেই হাজার হাজার কিশোর কিশোরী সহ নানা বয়সের মানুষ আটকে পরে মাদকের দূর্ভেদ্য জালে।
তিনি আরো বলেন মাদকাসক্তি দূর করার জন্য হোমিওপ্যাথিক ওষুধের উপকারিতা অনেক। মাদক প্ররোচিত নির্ভরতা দ্রুত এবং নিরাপদ পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করে হোমিওপ্যাথি ঔষধ। লক্ষণগুলি নিরাময়ে সহায়তা করে এবং রোগীকে এর খারাপ প্রভাবগুলি কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করে। হোমিওপ্যাথিক ওষুধ মানসিক অবস্থা পুনরুদ্ধারে সাহায্য করে অথবা আক্রান্ত ব্যক্তির মাদক গ্রহণের বাধ্যতামূলক অভ্যাসের প্রবণতা দূরীভূত করে । অ্যাভেনা স্যাটিভা, Nux Vomica, মরফিনাম, কফিয়া, Hyoscyamus, আফিম, Sulphuricum Acidum, স্ট্রাইকনিনাম নাইট্রিকাম, ক্যালাডিয়াম, ক্যানাবিস ইন্ডিকা ইত্যাদি হোমিওপ্যাথি ঔষধ গুলো মাদক সেবিদের জন্য অতন্ত্য কার্যকারী।
চাঁদপুর আর্দশ হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডাঃ মোঃ আতাহার আলী'র সভাপতিত্বে সহকারী অধ্যাপক ডাক্তার শেখ মহসীন এর সঞ্চালনায় সেনিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ১৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিল মোঃ আলমগীর গাজী, হোমিও কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ডাঃ মোঃ মোজ্জামেল হক পাটোয়ারী , সহযোগী অধ্যক্ষ ডাঃ মোঃ আশরাফ আলী, সহযোগী অধ্যাপক ডাক্তার মোহাম্মদ সাইদুল হক পাটোয়ারী,স্বাধীনতা হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সহকারি অধ্যাপক ডাঃ মানিক চন্দ্র সরকার, সরকারের অধ্যাপক ডাঃ শাহ আলম,প্রভাষক ডাক্তার শাহ আলম, বিশিষ্ট সমাজ সেবক মোঃ ওমর ফারুক মিজি,মোঃ আব্দুল খালেক মিজি,বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক মোঃ সুলতান আহমদ, বিশিষ্ট সংগঠক মোঃ সাহাদাত হোসেন বেপারী,আব্দুল আলীম মিয়াজী, মোঃ ইব্রাহিম মিয়া,প্রমূখ। এছাড়াও কলেজের মেডিকেল অফিসার, সহকারী মেডিকেল অফিসার অফিসার, অফিস সুপার ও অফিস সহায়ক সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে কোরআন তেলাওয়াত করেন সহযোগী অধ্যাপক ডাক্তার মোহাম্মদ শাহজাহান গীতা পাঠ করেন ডাঃ মানিক চন্দ্র সরকার।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!