বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছেন, শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর দেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার প্রয়োজন। গতকাল বুধবার আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন (কপ২৯) চলাকালে এএফপিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।
শান্তিতে নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদ বলেন, "দেশকে গণতান্ত্রিক নির্বাচনের দিকে নিয়ে যাওয়া আমাদের প্রধান লক্ষ্য। সংস্কারের গতি ও কার্যকারিতা নির্ধারণ করবে নির্বাচন কবে অনুষ্ঠিত হবে।" তিনি জোর দিয়ে বলেন, “এটি আমাদের দেওয়া একটি প্রতিশ্রুতি, আমরা যত দ্রুত প্রস্তুত হব, তত দ্রুত নির্বাচন দিয়ে জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে তুলে দেব।”
ড. ইউনূস আরও বলেন, সম্ভাব্য সাংবিধানিক সংস্কার, সরকার, জাতীয় সংসদ এবং নির্বাচনী বিধিমালার কাঠামো নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য অর্জন জরুরি। তিনি উল্লেখ করেন, "আমরা অন্তর্বর্তী সরকার, তাই আমাদের মেয়াদ যতটা সম্ভব সংক্ষিপ্ত হওয়া উচিত।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ৫ আগস্ট শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে গণ-আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হন এবং ভারতে পালিয়ে যান। তাঁর ১৫ বছরের কঠোর শাসনের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটে সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে। এই আন্দোলনে ৭০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হন, যাঁদের মধ্যে অনেকেই পুলিশের দমন-পীড়নের শিকার হন।
ড. ইউনূস আরও বলেন, দেশ বর্তমানে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, এবং স্থিতিশীলতা রক্ষায় অন্তর্বর্তী সরকার উদ্বিগ্ন। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, "আশা করছি, আমরা শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে পারব।
বাংলাদেশে প্রায় ১৭ কোটি মানুষের জীবনমান ও আর্থিক অবস্থা কঠিন সময় পার করছে। এ পরিস্থিতিতে চলতি মাসের শুরুতে আদানি গোষ্ঠী ৮৫ কোটি মার্কিন ডলার বকেয়া বিল পরিশোধের দাবি জানিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেক কমিয়ে দিয়েছে, যা বাংলাদেশের জন্য আরেকটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!