র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকেই দেশের সার্বিক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে সব ধরণের অপরাধীকে আইনের আওতায় নিয়ে আসার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাব নিয়মিত জঙ্গী, সন্ত্রাসী, সংঘবদ্ধ অপরাধী, মাদক, অস্ত্রধারী অপরাধী, ভেজাল পণ্য, ছিনতাইকারীসহ ধর্ষণ ও অপহরণের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে আসছে।
এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল শনিবার ২৫ আগস্ট ২০২৩ ইং তারিখ ২১.৩০ ঘটিকায় ফরিদপুর জেলার আলফাডাঙ্গা থানাধীন হেলেঞ্চা এলাকা হতে অধিনায়ক (র্যাব-৫ রাজশাহী) এর নির্দেশনায় মেজর আশিকুর রহমান, কোম্পানী অধিনায়ক, সিপিসি-২, নাটোর, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ রফিকুল ইসলাম, কোম্পানী অধিনায়ক, সিপিসি-৩, জয়পুরহাট এবং লেঃ কমান্ডার কে.এম শেখ আকতার, সিপিসি-৩, ফরিদপুর, র্যাব-১০ এর যৌথ নেতৃত্বে ১২ ঘন্টার রুদ্ধশ্বাস একটি অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অভিযান চলাকালীন সময়ে আলোচিত নাটোর জেলার গুরুদাসপুর থানার ৪র্থ শ্রেণীর ছাত্রী ধর্ষণের প্রধান এবং একমাত্র আসামী মোঃ জাহিদুল ইসলাম (৫০)-কে গ্রেফতার করে র্যাব-৫ এবং র্যাব-১০ এর একটি যৌথ আভিযানিক দল।
ঘটনার বিবরণে প্রকাশ : গত ১৮ নভেম্বর ২০২২ খ্রিঃ শুক্রবার দুপুর অনুমান ১.০০ ঘটিকায় মামলার ভিকটিমের বাড়ীতে কেউ না থাকার সুযোগে আসামী মোঃ জাহিদুল ইসলাম (৫০) ভিকটিমের মুখ গামছা দিয়ে বেঁধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে এবং ধর্ষণের বিষয়টি কাউকে জানালে আসামী ভিকটিমকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। ভিকটিম প্রাণের ভয়ে বিষয়টি গোপন রাখে।
আসামীর বিকৃত যৌন আকাঙ্ক্ষার শিকারে ভিকটিম অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। ভিকটিমের শারীরিক পরিবর্তন দেখে ভিকটিমের দাদী ভিকটিমকে জিজ্ঞাসা করলে ভিকটিম আসামী মোঃ জাহিদুল ইসলাম (৫০) কতৃক জোরপূর্বক ধর্ষিত হওয়ার ঘটনাটি জানায়।
পরবর্তীতে ভিকটিমের দাদী স্থানীয় ক্লিনিকে ভিকটিমের শারীরিক পরীক্ষা করালে জানতে পারেন ভিকটিম ০৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। এ প্রেক্ষিতে গত ১৮ জুন ২০২৩ ইং তারিখ ভিকটিমের দাদী বাদী হয়ে সংশ্লিষ্ট থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। উক্ত মামলার পর হতে আসামী গাঢাঁকা দেয়, এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
বিজ্ঞ আদালতে ভিকটিম ইং ১৯/০৬/২০২৩ তারিখে ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সং/০৩) এর ২২ ধারা মতে জবানবন্দী প্রদান করেন। ভিকটিমের জবানবন্দী অনুসারে জানা যায়, আসামী মোঃ জাহিদুল ইসলাম(৫০) ভিকটিমকে জেরপূর্বক ধর্ষণ করে।
উক্ত ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার বিষয়টি স্থানীয় লোকজনের মধ্যে ব্যাপক আলোড়ন ও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। ঘটনাটি স্থানীয় ও জাতীয় ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায়“ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা ৪র্থ শ্রেণীর ছাত্রী”শিরোনামে ব্যাপক ভাবে প্রচারিত হয়। গণমাধ্যম থেকে প্রাপ্ত তথ্যে এবং মামলার এজাহারের উপর ভিত্তি করে র্যাব-৫ ছায়া তদন্ত শুরু করে।
পরবর্তীতে নিজস্ব গোয়েন্দা নজরদারী এবং র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা বিভাগের সার্বিক সহযোগীতায় আসামীর অবস্থান সনাক্ত করে ইং ২৫/০৮/২০২৩ তারিখ ২১.৩০ ঘটিকায় ফরিদপুর জেলার আলফাডাঙ্গা থানাধীন হেলেঞ্চা এলাকায় র্যাব-৫ এবং র্যাব-১০ এর যৌথ অভিযানে ধর্ষক মোঃ জাহিদুল ইসলাম (৫০)-কে গ্রেপ্তার করা হয়। ধৃত আসামীকে নাটোর জেলার গুরুদাসপুর থানায় হস্তান্তর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।
প্রকাশ থাকে যে, গ্রেফতারকৃত মূল আসামী মোঃ জাহিদুল ইসলাম (৫০) সম্পর্কে ভিকটিমের প্রতিবেশী দাদা হয়। কোমলমতি শিশুরাও যে এ ধরনের পারিবারিক বিকৃত মস্তিস্কের নর পিশাচ থেকে সুরক্ষিত নয়। উক্ত ঘটনার মাধ্যমে তারই প্রতিফলন হয়। এই অভিযানে র্যাব সফল হলেও এই ঘটনা আমাদের সামাজিক এবং নৈতিক অবক্ষয়ের ভয়াবহ বার্তা দেয়।
তাই প্রতিটি পরিবারের উচিত তাদের সন্তানদের প্রতি আরো যত্নশীল ও নজরদারি বৃদ্ধি করা। একই সাথে এ ধরনের কোন অপরাধ সংঘটিত হলে দ্রুত আইনের আশ্রয় নেয়া।
উল্লেখ্য, আজ শনিবার (২৬-শে আগষ্ট ২০২৩ ইং) সিপিসি-২, নাটোর ক্যাম্প, র্যাব-৫, রাজশাহীর কতৃক ই-মেইল যোগে বিষয়টি এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই গণমাধ্যম কর্মীকে নিশ্চিত করা হয়েছে।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!