আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
কাশ্মীরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার জেরে উদ্ভূত যুদ্ধাবস্থা সামাল দিতে ভারত ও পাকিস্তানকে আলোচনার টেবিলে বসিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতিতে আনতে সক্ষম হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। টানা ৪৮ ঘণ্টা কূটনৈতিক দেন-দরবার শেষে শনিবার (১০ মে) সন্ধ্যায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।
কিন্তু সেই শান্তি টিকল মাত্র কয়েক ঘণ্টা। রোববার (১১ মে) সকালেই একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ তুলেছে দুই প্রতিবেশী দেশ।
আল জাজিরা ও দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল জানায়, ভোরে এক বিবৃতিতে পাকিস্তান জানায়, তারা ভারতের সঙ্গে স্বাক্ষরিত যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে এর আগেই ভারতের পক্ষ থেকে অভিযোগ তোলা হয়, পাকিস্তান সীমান্তে যুদ্ধবিরতির শর্ত ভেঙে গোলাগুলি শুরু করেছে। পাল্টা জবাবে ভারতীয় বাহিনীও সক্রিয় হয় বলে দাবি করা হয়।
এদিকে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, ভারতের দিক থেকেই যুদ্ধবিরতি ভঙ্গের ঘটনা ঘটেছে। তবে পাকিস্তানি বাহিনী পরিস্থিতি শান্ত রাখতে সর্বোচ্চ সংযম দেখাচ্ছে।
পাক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং যেকোনো জটিলতা নিরসনে কূটনৈতিক পর্যায়ে যোগাযোগ বাড়ানো প্রয়োজন। একইসঙ্গে সীমান্তে দায়িত্বরত সৈন্যদেরও সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানানো হয়েছে।
তবে ভারতের পক্ষ থেকে ভিন্ন সুর। গভীর রাতে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি বলেন, “যুদ্ধবিরতির মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পাকিস্তান ফের গোলাগুলিতে লিপ্ত হয়েছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক ও নিন্দনীয়। এ ঘটনার সম্পূর্ণ দায় পাকিস্তানের।”
তিনি আরও জানান, ভারতীয় সেনাবাহিনী এর উপযুক্ত জবাব দিচ্ছে এবং সীমান্ত পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। একইসঙ্গে সীমান্তে যেকোনো ধরনের আগ্রাসনের জবাব দিতে সেনাবাহিনীকে কঠোর অবস্থান নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, শনিবার সন্ধ্যায় যুদ্ধবিরতি কার্যকরের কয়েক ঘণ্টা পরই বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের শ্রীনগর, বারামুল্লা ও জম্মু এলাকা। এতে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
দুই দেশের মধ্যে সংঘাতময় এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক মহলও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কয়েকটি দেশ আবারও উভয়পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!