শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ হারের পর আবারও পুরোনো কথাই শুনতে হলো—দল এখনও তরুণ, সময় দিতে হবে। অথচ খোঁজ নিয়ে দেখা যাচ্ছে, কথার চেয়ে বাস্তবতা ভিন্ন। অভিজ্ঞতায় ভরা স্কোয়াডের ব্যর্থতার দায় এবার চাপানো হলো ‘তরুণদের কাঁধে’।
অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ বললেন, "দল তরুণ, কিছু খেলোয়াড় নতুন এসেছে, সময় দিলে ভালো করবে।" কিন্তু প্রশ্ন হলো—এই ‘নতুন’ খেলোয়াড় কারা? স্কোয়াডে অভিষিক্ত মাত্র দুজন—ইমন আর তানভীর। বাকি সবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা গেড়েই ফেলেছেন বহু আগেই।
বিশ্লেষণে দেখা যায়, তাসকিন, মোস্তাফিজ, শান্ত, হৃদয়, এমনকি মিরাজ নিজেও অন্তত একাধিক বিশ্বকাপ বা এশিয়া কাপ খেলে ফেলেছেন। বয়সে তরুণ হলেও ক্রিকেটের পাঠ পুরনো। তাহলে এই ব্যর্থতার আসল কারণ কী?
মিডল অর্ডার: বাংলাদেশ দলের পুরনো ব্যথার নাম
সিরিজজুড়ে স্পষ্ট হয়েছে, মিডল অর্ডারে কোনো পরিকল্পনাই ছিল না। যারা মিডল অর্ডারে খেলেছেন, তাদের বেশিরভাগই প্রকৃত ওপেনার! যেমন—লিটন, শান্ত, ইমন, নাঈম—সবাই ওপেনার। মিডল অর্ডার স্পেশালিস্ট হিসেবে শুধু দুইজন—তাওহীদ হৃদয় ও জাকের আলী।
যখন মিডল অর্ডার মূল সমস্যা, তখন ওপেনার দিয়ে তা পূরণ করতে যাওয়া একরকম আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। লিটন মিডল অর্ডারে মানিয়ে নিতে পারেননি, শামীম পাটোয়ারী ফিনিশারের ভূমিকায় পুরোপুরি ব্যর্থ। হৃদয় দুটো ফিফটি করেছেন বটে, কিন্তু স্ট্রাইক রেট মাত্র ৬৮.২১—যা ওয়ানডেতে গ্রহণযোগ্য নয়।
পুরনো সমস্যার পুনরাবৃত্তি
গত এক বছরে আফগানিস্তান, ভারত, নিউজিল্যান্ড—সবার বিপক্ষেই মিডল অর্ডারে ধস দেখা গেছে। ব্যাটিং ধস ১২০/২ থেকে ১৪৩/১০—এই রকম স্কোর তো আর তরুণ দলের সমস্যা নয়! এই ধস অভিজ্ঞদের নিয়েই হয়েছে।
কখনো মুখরক্ষায় ব্যাট করছেন জাকের-তানজিম, আবার কখনো দেখা যাচ্ছে অভিজ্ঞরা এক অঙ্কেই ফিরছেন।
প্রক্রিয়ার নামে জোড়াতালি
নির্বাচক ও টিম ম্যানেজমেন্টের প্রক্রিয়া এখন প্রশ্নবিদ্ধ। মিডল অর্ডারে স্পেশালিস্ট না রেখে ওপেনার দিয়ে পজিশন পূরণ করলেই কি সেটা পরিকল্পনা হয়? জোড়াতালি দিয়ে গড়া মিডল অর্ডারে আবারও ধরা খেয়েছে বাংলাদেশ।
অধিনায়ক যখন সময় চেয়ে বলেন ‘প্রক্রিয়া ঠিক আছে’, তখন প্রশ্ন ওঠে—প্রক্রিয়া কি আদৌ ঠিক আছে? সমস্যার গোড়ায় না গিয়ে শুধু সময় চেয়ে গেলে ক্রিকেট এগোয় না, পিছিয়ে পড়ে।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!